সজনেপাতার কদর এখন বিশ্বজোড়া। গাছের বীজ থেকে পাতা, ফুল— সবই খাওয়া যায়। তবে সজনের কদর তার পুষ্টিগুণের জন্য। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ভিটামিন এ এবং সি-সমৃদ্ধ এই ভেষজে আয়রন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, জ়িঙ্কের মতো খনিজও রয়েছে ভরপুর মাত্রায়। এ ছাড়া অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদানও রয়েছে এতে।

গুণের বহর দেখেই নানা উপায়ে তা খাওয়া শুরু হয়েছে। এখন কৌটোজাত সজনেপাতার গুঁড়োই ‘মোরিঙ্গা’ নামে বিকোয় চড়া দামে। শুধু স্বাস্থ্য ভাল রাখতেই নয়, এই গাছের পাতা, ডাঁটায় থাকা ভিটামিন, খনিজের গুণের জন্য মোরিঙ্গা ব্যবহৃত হয় রূপচর্চাতেও।

চুলের যত্নে সজনে

চুলের যত্নে সজনে মাখাও যায়। তার কারণও আছে। চুল মসৃণ এবং সুন্দর করতে, ময়েশ্চারাইজ়ারের জোগান দিতে, মাথার ত্বকে পুষ্টি জুগিয়ে চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে সজনেপাতা। তবে সজনের বীজও কম উপকারী নয়। বাজারে মেলে মোরিঙ্গা তেল। রুক্ষ, নিষ্প্রাণ চুলে জেল্লা ফেরাতে তার কয়েক ফোঁটাই যথেষ্ট। সজনে ডাঁটা শুকিয়ে গেলে তার ভিতর থেকে বীজ সংগ্রহ করা হয়। সেই বীজ থেকে তৈরি হয় এই তেল।

সজনের তেল

মোরিঙ্গা অয়েল বা সজনের বীজ থেকে তৈরি তেল চুলে সিরামের মতো কাজ করে। ভিটামিন সি-এর গুণে চুল হয় সুন্দর। সজনেপাতায় মেলে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টও। তা ছাড়া অনেকে চিটচিটে হয়ে যাওয়ার ভয়ে চুলে তেল মাখতে চান না। মোরিঙ্গা অয়েল কিন্তু মোটেও তেমন নয়। হালকা তেল সহজেই মাথার ত্বকে মিশে যায়। চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতেও এটি সাহায্য করে।

কীভাবে ঘরেই বানাবেন তেলটি?

বাজারচলতি সজনে বীজের তেল কতটা খাঁটি তা নিয়ে যদি প্রশ্ন থাকে, তা হলে খানিকটা পরিশ্রম করে বাড়িতেও তা বানিয়ে ফেলতে পারেন। এ জন্য লাগবে সজনের বীজ, এসেনশিয়াল অয়েল এবং ক্যারিয়ার অয়েল। ক্যারিয়ার অয়েল হিসাবে নারকেল, জোজোবা অয়েল বেছে নিতে পারেন। এসেনশিয়াল অয়েলের তালিকায় রাখতে পারেন ল্যাভেন্ডার, রোজ়মেরি, পেপারমিন্ট অয়েল।

পদ্ধতি: সজনের বীজ থেকে সরাসরি কোল্ড প্রেস পদ্ধতিতে তেল বার করাই যায়। কিন্তু সেটা বাড়িতে করাটা বেশ কঠিন। তার বদলে সজনের বীজ ফাটিয়ে নিন। একটি পরিষ্কার কাচের পাত্রে পছন্দের ক্যারিয়ার অয়েলের সঙ্গে বীজের গুঁড়ো মিশিয়ে নিতে হবে। উষ্ণ জায়গায় তা ২-৩ সপ্তাহ রাখুন। মাঝেমধ্যে শিশিটি ঝাঁকিয়ে নিতে হবে। মোটামুটি ৩-৪ সপ্তাহ হয়ে গেলে তেলটি ছেঁকে তার সঙ্গে কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন।

ব্যবহারবিধি: অপরিষ্কার মাথায় তেল ব্যবহার না করাই ভাল। তার বদলে শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করে চুল শুকিয়ে নিন। তার পর অল্প একটু তেল নিয়ে মাথার ত্বক এবং চুলে হালকা মালিশ করুন। অতিরিক্ত তেল মাখার দরকার নেই। রাতভর মাথায় তেল থাকলেও ক্ষতি নেই। সে ক্ষেত্রে সকালে উঠে চুলে শ্যাম্পু করে নিতে পারেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here