ভারত যেমন মন্দিরের দেশ, তেমনই এটি দুর্গের দেশও। কারণ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫০০ টিরও বেশি দুর্গ রয়েছে। এই দুর্গগুলির মধ্যে অনেকগুলির বয়স শত বছরেরও পুরনো যাদের নির্মাণ সম্পর্কে কেউ জানে না। এখানে উপস্থিত অনেক দুর্গকেও কোনও না কোনওঁ কারণে রহস্যময় বলে মনে করা হয়। আজ আমরা আপনাকে এমনই একটি দুর্গের কথা বলতে যাচ্ছি, যেটি থেকে পুরো পাকিস্তান দেখা যায় বলে কথিত আছে। কিন্তু এই দুর্গের অষ্টম দরজাটিকে খুবই রহস্যময় বলে মনে করা হয়।
এই দুর্গটি মেহরানগড় দুর্গ নামে পরিচিত। রাজস্থানের যোধপুর শহরের ঠিক মাঝখানে অবস্থিত এই দুর্গটি প্রায় ১২৫ মিটার উচ্চতায় নির্মিত। এই দুর্গের ভিত্তি পঞ্চদশ শতকে রাও যোধা স্থাপিত করেছিলেন, কিন্তু এর নির্মাণ কাজ শেষ করেছিলেন মহারাজা যশবন্ত সিং। এই দুর্গটি ভারতের প্রাচীনতম এবং বৃহত্তম দুর্গগুলির মধ্যে একটি, যা ভারতের সমৃদ্ধ অতীতের প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হয়। আটটি দরজা এবং অগণিত সৌধ বিশিষ্ট এই দুর্গটি উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা।
যদিও এই দুর্গের মাত্র সাতটি দরজা (খুঁটি) রয়েছে, তবে বলা হয় যে এই দুর্গে আরওঁ একটি অষ্টম দরজাও রয়েছে যা রহস্যজনক। হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য দুর্গের প্রথম ফটকে নির্দেশিত পেরেক বসানো হয়েছিল। এই দুর্গের অভ্যন্তরে অনেকগুলি বিশাল প্রাসাদ রয়েছে, চমৎকার খোদাই করা দরজা এবং জালির জানালা রয়েছে, যার মধ্যে মতি মহল, ফুল মহল, শীষ মহল, সিলেহখানা এবং দৌলতখানা খুব বিশেষ। দুর্গের কাছে চামুন্ডা মাতার একটি মন্দির রয়েছে, যা ১৪৬০ খ্রিস্টাব্দে রাও যোধা তৈরি করেছিলেন।
নবরাত্রির দিনগুলিতে এখানে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। মেহরানগড় দুর্গ নির্মাণের গল্পটি এমন যে রাও যোধা যখন যোধপুরের পঞ্চদশতম শাসক, এক বছর পরে অনুভব করেছিলেন যে মান্দোর দুর্গ তার জন্য নিরাপদ নয়। তাই তিনি তাঁর তৎকালীন দুর্গ থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটি পাহাড়ে দুর্গ নির্মাণের কথা ভাবলেন। সেই পাহাড়টি ‘ভোর চিড়িয়াটুঙ্ক’ নামে পরিচিত ছিল, কারণ সেখানে প্রচুর পাখি বাস করত। ১৪৫৯ সালে রাও যোধা এই দুর্গের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন বলে মনে করা হয়।