এবছর কৌশিকী অমাবস্যা শুরু হচ্ছে ২ সেপ্টেম্বরে। মঙ্গলবার ৩ সেপ্টেম্বর এই তিথি শেষ হবে। কৌশিকী অমাবস্যায় মহাসমারোহে পূজা হয় মা তারার। মা তারারই আরেক নাম কৌশিকী। কথিত রয়েছে, কৌশিকী রূপেই শুম্ভ নিশুম্ভকে বধ করেছিলেন মা তারা।

এর আরেক নাম ‘তারা রাত্রি’। এই অমাবস্যার দিন সংযম পালন করতে হয় । তাই এদিন উপোস রাখতে পারলে খুবই ভাল। তা না পারলেও নিরামিষ খান বলে মত জ্যোতিষশাস্ত্রের।

কৌশিকী শব্দের আভিধানিক অর্থ হল ‘আদ্যাশক্তির রূপ বিশেষ’।পুরাণ মতে, কৌশিকী রূপেই শুম্ভ নিশুম্ভকে বধ করেছিলেন আদ্যাশক্তি। শ্রীশ্রীচণ্ডীতে বর্ণিত মহা সরস্বতী দেবীর কাহিনীতে বলা আছে পুরাকালে একবার শুম্ভ ও নিশুম্ভ কঠিন সাধনা করেছিলেন ব্রহ্মাকে তুষ্ট করতে। কঠিন সাধনার পর প্রজাপতি ব্রহ্মা খুশি হয়ে তাঁদের বর দিয়েছিলেন, কোন পুরুষ তাঁদের বধ করত পারবে না। শুধু কোন নারী বধ করতে পারবে, তবে সেই নারী হতে হবে অ-যোনি সম্ভূতষ অর্থাৎ মাতৃগর্ভ থেকে জন্ম নেননি এমন নারী। এদিকে দুই অসুরের অত্যাচার বেড়ে চলেছে। এমন সময় এদের বধ কে করবে এই নিয়ে চিন্তিত ছিল দেবতাগণ।

দেবী পার্বতীর কালিকা-জন্মে তাঁর রং ছিল কালো মেঘের মতো। তাই শিব তাঁকে কালিকা বলে ডাকতেন। জানা যায় শিব পুরাণে ভগবান শিব দেবী পার্বতীকে তাঁর কালো ত্বকের জন্য উপহাস করার পরে, দেবী পার্বতী রেগে যান। সতী যখন দক্ষ যজ্ঞ স্থলে দেহত্যাগ করেছিলেন। তখন যখন সকলের সামনেই কালিকাকে ডেকে ওঠেন, তখন থেকেই পার্বতী তপস্যা শুরু করেন তাঁর কালো ত্বক মুছে ফেলার জন্য।

তপস্যার শেষে তাঁর গায়ের রঙ হল পূর্ণিমার চাঁদের মতো। আর ওই কালো কোশিকাগুলি থেকে এক অপূর্ব সুন্দর কৃষ্ণবর্ণ দেবীর সৃষ্টি হয়। তিনিই দেবী কৌশিকী। সেই দেবী কৌশিকীই এই অমাবস্যা তিথিতে শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করেন। তাই এই অমাবস্যার নাম কৌশিকী অমাবস্যা। যেখান থেকে তিনি অন্ধকার দেবী কৌশিকী রূপে আবির্ভূত হন, রাক্ষসদের হত্যা করেন এবং আবার ফর্সা হয়ে শিবের কাছে ফিরে আসেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here