মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভা থেকে ফোঁস করে উঠতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এবার নিজের বক্তৃতার ‘ব্যাখ্যা’ দিলেন মমতা।
সমাজমাধ্যমে এ বিষয়ে বিশদে জানিয়ে মমতা লিখেছেন, ‘‘আমি কিছু সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল এবং ডিজিটাল মিডিয়াতে একটি নোংরা, বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চিহ্নিত করেছি। গত কাল আমাদের ছাত্রদের কর্মসূচিতে আমি যে বক্তৃতা করেছিলাম, সে প্রসঙ্গেই রিপোর্টগুলি প্রকাশ করা হয়েছে।’’
এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন ‘‘আমি অত্যন্ত দৃঢ় এবং স্পষ্ট ভাবে বলতে চাই যে, পড়ুয়াদের (ডাক্তারি) বা তাঁদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করিনি। আমি তাঁদের আন্দোলনকে সম্পূর্ণ সমর্থন করি। তাঁদের আন্দোলন ন্যায্য। আমি কখনওই তাঁদের হুমকি দিইনি। কিন্তু কিছু মানুষ আমাকে অভিযুক্ত করছেন। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’’
আগের দিন ঠিক কী বলেছিলেন মমতা? বুধবার মেয়ো রোডের মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘‘আমায় অনেক গালাগালি দিয়েছেন। অনেক অসম্মান করেছেন। আমি অনেক ভেবেছি। আমি ভেবে দেখলাম, এঁদের বিরুদ্ধে কোনও দিনও বদলা নিইনি। আমরা বলেছিলাম বদলা নয়, বদল চাই। আজ বলছি, ওই কথা নয়। আজ বলছি, যেটা করার দরকার, সেটা আপনারা ভাল বুঝে করবেন। আমি অশান্তি চাই না। কিন্তু কুৎসা, অপপ্রচার এবং চক্রান্ত করে যে আপনাকে রোজ কামড়াচ্ছে, তাকে আপনি কামড়াবেন না ঠিকই। কিন্তু ফোঁস তো করতে পারেন।’’
এরপর থেকে সরগরম হয়ে উঠেছে বিরোধী রাজনীতি। বিরোধীদের একহাত নিয়ে এবং আত্মপক্ষ সমর্থন করে সমাজমাধ্যমের পোস্টে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যা— ‘‘আমি গত কাল আমার বক্তৃতায় যে বাক্যাংশটি ব্যবহার করেছি তা শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসের একটি উদ্ধৃতি। কিংবদন্তি সাধক বলেছিলেন, মাঝেমাঝে আওয়াজ তুলতে হয়। অপরাধ ও ফৌজদারি অপরাধ হলে প্রতিবাদের আওয়াজ তুলতে হবে।’’
পড়ুয়ারা নন, টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবসে তাঁর নিশানা যে বিজেপি ছিল, সে কথাও বৃহস্পতিবার খোলাখুলি জানিয়েছেন মমতা। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আমি তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছি কারণ, ভারত সরকারের মদতে তারা আমাদের রাজ্যে গণতন্ত্রকে আঘাত করার এবং নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। কেন্দ্রের সমর্থনে তারা অনাচার তৈরি করার চেষ্টা করছে। তাই আমি তাদের বিরুদ্ধে আমার আওয়াজ তুলেছি।’’