সনাতন ধর্মে ঋষি ও সাধুদের ভগবান লাভের মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সাধু-ঋষিদের পোশাক-পরিচ্ছদ ভিন্ন, তাদের বস্তুবাদী ভোগ-বিলাস ত্যাগ করে সত্য ও ধর্মের পথে চলে। সাধারণত সাধু-ঋষিদের লাল, হলুদ বা কেশর রঙের পোশাকে পরতেই দেখা যায়। আর একদল রয়েছেন যারা পোশাক পরিচ্ছদের ধার ধারেন না। গঙ্গাসাগর মেলায় সাধারণ ভক্তকূলের ভিড় যেমন চোখে পড়ে, তেমনি হাজারো নাগা সাধু, সন্ন্যাসীদেরও উপস্থিতি চোখে পড়ার মত।
অন্যদিকে তীব্র ঠান্ডার মধ্যে নগ্ন অবস্থায় দেখা আখড়ায় থাকেন নাগা সাধুরা। সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায়, গায়ে ধুনি বা ছাই মুড়িয়ে ঘুরে বেড়াযন তাঁরা। নাগা সাধুরা প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক অবস্থাকে গুরুত্ব দেন। বিশ্বাস করেন যে একজন মানুষ নগ্ন হয়ে জন্মগ্রহণ করে, আর সেটাই স্বাভাবিক। এই অনুভূতিকে আত্মস্থ করে নাগা সাধুরা সবসময় নগ্ন থাকেন।
নাগা সাধুরা তিন ধরনের যোগব্যায়াম করে থাকেন। ফলে তীব্র ঠান্ডা মোকাবেলায় তাঁদের শরীর থাকে ফিট ও সুস্থ। শুধু যোগ ব্যায়াম করেই নয়, রয়েছে চিন্তা ও খাবারের প্রতিও সংযমও। নাগা সাধু হওয়ার প্রক্রিয়াটি মোট ১২বছর সময় লাগে। যার মধ্যে ৬ বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। এই সময়কালে, তারা নাগা ধর্ম অনুসারে যোগদানের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য অর্জন করে। এই সময়ে তারা একটি লেঙ্গোট ছাড়া অন্য কিছু পরেন না। কুম্ভমেলায় ব্রত নেওয়ার পর সেই সামান্য কাপড়ও ত্যাগ করেন। তারপর থেকে সারা জীবন নগ্ন থাকেন।
নাগা সাধুরা দিনে ৭টি বাড়ি থেকে ভিক্ষা চাইতে পারেন। বাড়ি বাড়ি যদি ভিক্ষা পাওয়া যায় তাহলে ঠিক আছে, না হলে অভুক্ত থাকতে হবে, এমনটাই নিয়ম। তারা সারা দিনে মাত্র একবার খাবার গ্রহণ করেন।