হনুমানজি কলিযুগের দেবতা বলে মনে করা হয়। কারণ কলিযুগে একমাত্র তিনিই হলেন দৃশ্যমান দেবতা। শাস্ত্র অনুসারে মঙ্গলবার দিনটি হনুমানের উদ্দেশ্যে নিবেদিত, এই দিনে বজরংবলীর বিশেষ পুজো করা হয়। আজ আমরা জেনে নেব বজরংবলী সম্পর্কে কয়েকটি অবাক করা তথ্য।
মহাদেবের অবতার
ধর্মীয় শাস্ত্র অনুসারে রামভক্ত হনুমান হলেন মহাদেবের একাদশতম অবতার। বিষ্ণুর অবতার শ্রীরামকে সাহায্য করতে অঞ্জনির গর্ভে জন্ম নেন মহাদেব।
হনুমৎ রামায়ণ
শ্রীরামের পরম ভক্ত হলেন হনুমান। বলা হয়ে থাকে বাল্মীকি রামায়ন রচনা করার আগেই রামায়ন রচনা করেছিলেন হনুমান। একে বলা হয় হনুমৎ রামায়ন। লঙ্কায় রাবণ বধের পরে রাম সীতা লক্ষ্মণ যখন অযোধ্যায় ফিরে আসেন, তখন হনুমান হিমালয়ে চলে যান। সেখানে পাহাড়ের গায়ে নিজের নখ দিয়ে হনুমাদ রামায়ণ রচনা করেন।
গায়ে সিঁদুর লেপন
শাস্ত্র অনুসারে, একবার হনুমানজি সীতা মাকে জিজ্ঞেস করেন যে তিনি কেন সিঁথিতে সিঁদুর পরেন। তখন সীতা একটি আমের গায়ে সিঁদুর লাগিয়ে বলেন যে সিঁদুর লাগানোর ফলে রামের আয়ু বৃদ্ধি পাবে। তখন রামের দীর্ঘজীবন কামনা করে হনুমান নিজের সর্বাঙ্গে সিঁদুর লেপন করে নেন।
পঞ্চমুখী অবতার
শ্রীরামচন্দ্র ও তাঁর ভাই লক্ষ্মণকে রক্ষা করতে হনুমান তাঁর পঞ্চমুখী অবতার রূপ গ্রহণ করেন। রাবণের সঙ্গে যুদ্ধকালে রহস্যময় অহিরাবণ তন্ত্রবিদ্যা প্রয়োগ করে রাম ও লক্ষ্মণকে অচেতন করে ফেলে। তখন বিভীষণ হনুমানকে বলেন যে যদি তিনি পাঁচ দিকে মুখ থাকা একটি পঞ্চমুখী প্রদীপ একসঙ্গে নিভিয়ে দিতে পারেন, তবে অহিরাবণের ক্ষমতা হ্রাস পাবে। তখন বজরংবলী পঞ্চমুখী অবতার রূপ গ্রহণ করেন এবং পাঁচ মুখ দিয়ে পঞ্চমুখী প্রদীপ নিভিয়ে রাম ও রাবণের চেতনা ফিরিয়ে আনেন।
সূর্য নমস্কার
শাস্ত্র অনুসারে সূর্য নমস্কার আসনের উদ্ভাবক হলেন বজরংবলী। হনুমানের গুরুদেব হলেন সূর্য। সূর্যদেবের থেকে সকল বেদের শিক্ষা গ্রহণ করার পর গুরুদক্ষিণা হিসেবে সূর্য নমস্কার আসনের উদ্ভাবন করেন বজরংবলী।
হনুমানের পুত্র মকরধ্বজ
অহিরাবণের হাত থেকে রাম ও লক্ষ্মণকে রক্ষা করতে পাতাললোক গমন করেন বজরংবলী। সেখানে হনুমানের আকৃতির এক প্রাণী তাঁকে পিতা বলে সম্বোধন করেন। এই কথা শুনে হনুমান রেগে যান, বলেন অসম্ভব, তিনি ব্রহ্মচারী। তখন হনুমানকে মকরধ্বজ বলেন যে লাফ দিয়ে সমুদ্র পেরনোর সময় তাঁর শরীরের এক ফোঁটা ঘাম একটি মকরের মুখের ভেতর পড়ে। তাতে ওই মকর গর্ভবতী হয়ে পড়ে। সেই মকর থেকেই জন্ম হয় মকরধ্বজের।