ছত্রপতি শিবাজি পরাক্রমশালী মুঘলদেরও বীরত্ব দিয়ে নতজানু হতে বাধ্য করেছিলেন। তিনি কেবল একজন মহান শাসকই ছিলেন না, একজন অসাধারণ যোদ্ধাও ছিলেন। তাঁর সামরিক কৌশল ছিল দেখার মতো। গেরিলা যুদ্ধের নতুন কৌশল শিখিয়েছিলেন শিবাজী মহারাজ।
শিবাজির রাজ্যাভিষেক হয়েছিল ১৬৭৬ সালের ৬ জুন। শিবাজি সম্পর্কে এমন অনেক তথ্য রয়েছে, যা হয়তো কেউ জানেনই না।
শিবাজি একজন ধর্মনিরপেক্ষ শাসক ছিলেন এবং সকল ধর্মকে সমানভাবে সম্মান করতেন। তিনি বলপূর্বক ধর্মান্তরের বিরুদ্ধে ছিলেন। মুসলমানরা তাঁর সেনাবাহিনীতে উচ্চ পদে কর্মরত ছিলেন। ইব্রাহিম খান ও দৌলত খান তাঁর নৌবাহিনীতে বিশেষ পদে ছিলেন। সিদ্দী ইব্রাহিম ছিলেন তার সেনার অস্ত্রবাহিনীর প্রধান।
শিবাজি তার সৈন্য সংখ্যা ২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার করেছিলেন। ভারতীয় শাসকদের মধ্যে তিনিই প্রথম, যিনি নৌবাহিনীর গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি সিন্ধুগড় এবং বিজয়দুর্গকে তাঁর নৌদুর্গ করেন। রত্নাগিরিতে শিবাজি তাঁর জাহাজ ঠিক করার জন্য একটি দুর্গ প্রস্তুত করেছিলেন।
তাঁর সেনাবাহিনীই প্রথম যেখানে গেরিলা যুদ্ধ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। স্থল যুদ্ধে শিবাজীর দক্ষতা ছিল, যা শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে উপকৃত হয়েছিল। তিনিই প্রথম শাসক যিনি পেশাদার সেনাবাহিনী প্রস্তুত করেছিলেন।
শিবাজি সংস্কৃত ও হিন্দু রাজনৈতিক ঐতিহ্যের প্রসার চেয়েছিলেন। তাঁর দরবারে পার্সির পরিবর্তে মারাঠি ভাষা ব্যবহার করা হত। ব্রিটিশ ঐতিহাসিকরা তাঁকে ডাকাত বলেছেন, কিন্তু স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর ভূমিকাকে মহান হিন্দু শাসক হিসেবে দেখানো হয়েছে।
শিবাজি আশ্বস্ত করতেন যে তিনি শত্রু বাহিনীর সৈন্যদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবেন না। সম্ভব হলে তাঁর সেনাবাহিনীতেও একই পদ দেওয়া হবে তাঁকে। ধরা পড়া কোন নারীকে দাসী হিসেবে রাখা হবে না। তাঁকে সম্মানের সঙ্গে গৃহে পাঠিয়ে দেওয়া হত।