তন্ত্র, মন্ত্র ও যন্ত্র এই তিন উপায়ে হিন্দু ধর্মে দেব-দেবীকে প্রসন্ন করা হয়। যার মধ্যে মন্ত্রের বিশেষ গুরুত্ব আছে। পূজার্চনা থেকে যেকোনও শুভ কাজ বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের গুরুত্ব সার্বজনীন। শাস্ত্র মতে, সকাল ও বিকেলে মন্ত্রপাঠের গুরুত্বও ভিন্ন হয়। হিন্দু শাস্ত্রে এমন কিছু মন্ত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়, যা সন্ধ্যাবেলা আরতির সময় উচ্চারণ করলে শুভ ফল পাওয়া যেতে পারে। শাস্ত্র মতো সন্ধ্যা প্রদীপের সময় এই মন্ত্র উচ্চারণ করাকে বিশেষ ফলদায়ী মনে করা হয়। পাশাপাশি সন্ধ্যাবেলা এই সমস্ত মন্ত্রোচ্চারণ করলে লক্ষ্মী প্রসন্ন হন। দেখে নিন সন্ধ্যাবেলা কোন কোন মন্ত্র পাঠ করবেন-
১. শুভং করোতি কল্যাণম্ আরোগ্যম্ ধনসম্পদা।
শত্রুবুদ্ধিবিনাশায় দীপকায় নমোস্তুতে।।
অর্থ- প্রদীপের প্রকাশকে নমন করছি, যা পরিবেশে শুভ, স্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধির আগমন ঘটায়। যা পরিবেশ ও মনের অনৈতিক আবেগ ও নেতিবাচক শক্তিকে নষ্ট করে। প্রদীপ জ্বালালে সমস্ত শত্রু ধ্বংস হয় এবং পরিবারে সুখ-শান্তির বাস হয়।
২. দীপো জ্যোতি পরং ব্রহ্ম দীপো জ্যোতির্জনার্দনঃ।
দীপো হরতু মে পাপং সন্ধ্যাদীপ নমোস্তুতে।।
অর্থ- প্রদীপের প্রকাশ পরব্রহ্ম স্বরূপ। প্রদীপের আলো এমন পরমেশ্বর যা জগতের দুঃখ দূর করে। প্রদীপ আমার পাপ দূর কর। হে দীপজ্যোতি, আপনাকে নমস্কার করছি এবং আপনাকে প্রতিদিন প্রজ্জ্বলিত করার শপথ নিচ্ছি।
৩. অন্তর্জ্যোতির্বহির্জ্যোতিঃ প্রত্যগ্জ্য়োতিঃ পরাত্পরঃ।
জ্যোতির্জ্যোতিঃ স্বয়ংজ্যোতিরাত্মজ্যোতিঃ শিবোস্ম্যহম্।।
অর্থ- এই মন্ত্রের আক্ষরিক অর্থ হল, আমার মধ্যে দিব্য প্রকাশ রয়েছে, তা ভিতর-বাহির ও বিশ্বে যে প্রকাশ ছড়িয়ে রয়েছে তার মালিক। সমস্ত প্রকাশকুঞ্জের উৎস একটিই এবং সেটি পরমাত্মা শিব। এই প্রদীপকে প্রতিদিন প্রজ্জ্বলিত করার শপথ নিচ্ছি।
৪. কর্পূরগৌরং করুণাবতারং, সংসারসারম্ ভুজগেন্দ্রহারম্
সদাবসন্তং হৃদয়ারবিন্দে, ভবং ভবানীসহিতং নমামি
অর্থ- যা কর্পূরের মতো শুদ্ধ ও গৌর বর্ণের, সেটি করুণার সাক্ষাৎ রূপ। তিনি এই সংসারের সারমর্ম ও ভূজঙ্গের মালা ধারণ করেন। তিনি ভগবান শিব ও পার্বতী-সহ আমার হৃদয় বাস করেন এবং আমি তাঁরে প্রণাম করছি।