হিন্দু ধর্মের আসল নাম সনাতন ধর্ম। সনাতন হিন্দু ধর্ম অনুসারে সকল দেবতা আসলে পরম ব্রহ্মার রূপেরই বহিপ্রকাশ। তাই যে কোনও দেবতাকে, বা স্রষ্টাকে পাওয়ার চেষ্টা করা মানে, আসলে ব্রহ্মাকে পাওয়ারই চেষ্টা করা। হিন্দুরা অনেক দেবদেবীর পুজা করলেও হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলোতে হিন্দুদের কেবলমাত্র এক জন ঈশ্বরের উপাসনা করতে বলা হয়েছে।
বেদের ‘ব্রহ্মসূত্র’ তে আছে ‘একম ব্রহ্মা দ্বৈত্য নাস্তি নহিনা নাস্তি কিঞ্চন’ অর্থাৎ ঈশ্বর এক তাঁর মত কেউ নেই, সামান্যও নেই। আরও আছে ‘তিনি একজন তাঁরই উপাসনা কর’ ।
সামবেদে বলা হয়েছে – “মদৌ বর্তিতা দেবাদ কারান্তে প্রকৃত্তিতাবৃষাণং ভক্ষয়েত্ সদা সেদা শাস্ত্রের স্মৃতা” অর্থাত্ যে দেবের নামের প্রথম অক্ষর ম ও শেষ অক্ষর দ এবং বৃষমাংস ভক্ষণ সর্ব কালের জন্য বৈধ করবেন। তিনিই হবেন বেদ অনুযায়ী সেই ঋষি।
যেহেতু হিন্দু ধর্ম প্রাচীন ধর্ম, এবং সবার বেদ,গীতা পড়ার অধিকার ছিল না তাই সেই সময়কার কিছু ঋষি মুনির কারনে মুর্তি পুজোর উদ্ভব হয়েছে । বেদে আছে ;’কোনো শুদ্র যদি ইচ্ছা পূর্বক বেদের কথা শুনে তাহলে তার কানে গলানো রাং ঢেলে দিতে হবে, সে যদি বেদ পড়ে তাহলে তার জিহবা কেটে ফেলতে হবে। আর যদি সে বেদকে মুখস্থ করে তবে তার দেহকে দু’টুকরো করতে হবে।” পাঁচ হাজার বছর আগে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো নগরে দেবী সরস্বতীর পূজা হতো। বৌদ্ধ সরস্বতীর তিন মুখ ও ছয় হাত। বৌদ্ধ জগতে বাগ্মীশ্বর মঞ্জুশ্রীর শক্তি সরস্বতী। সাধনমালা নামে বৌদ্ধতন্ত্রে মহাসরস্বতী,বজ্রবীণা সরস্বতী, বজ্রসারদা ও আর্য সরস্বতীর ধ্যান আছে। এছাড়া জৈন ধর্মের উত্তর সম্প্রদায়ের মন্দিরে সরস্বতী ও অন্যান্য দেবীর মূর্তি আছে। ডক্টর বিনয় তোষ ভট্টাচার্যের মতে, বাংলার এই জনপ্রিয় দেবী বৌদ্ধতন্ত্রের সৃষ্টি।