২৬ জানুয়ারি দেশ জুড়ে পালিত হয় প্রজাতন্ত্র দিবস। ১৯৫০ সালের ২৬ জানিয়ারি প্রথমবারের জন্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সম্মান পায় ভারত। পৃথিবীর বুকে নয়া রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম নিয়েছিল স্বাধীন রাষ্ট্র ভারতবর্ষ। প্রতি বছর এই দিনটি মহাসমারোহে পালিত হয়। পৃথিবীতে করোনা আসার আগে পর্যন্ত প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন বিদেশ থেকে বহু ব্যক্তিত্ব উপস্থিত হতেন। করোনা আবহে সেসব বন্ধ। এই বছর থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ২৩ জানুয়ারি থেকেই গণতন্ত্র দিবস পালনের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

 

১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীনতা পায়। এরপর বিশ্বের দরবারে ভারতের আসন গঊরবান্বিত করার জন্য দরকার ছিল সার্বভৌম হওইয়া। যার মাধ্যমে বহু ঐটিহ্যবাহী বোঝাতে পারত সে সার্বভৌম রাষ্ট্র। অন্য কোনও দেশের আধিপত্য আর তার ওপর নেই। সেই ভাবেই তৈরি হয় সংবিধান। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে ডক্টর রাজেন্দ্রপ্রসাদ শপথ গ্রহণ করেন। আরউইন স্টেডিয়ামে জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয়। পরইবর্তীতে ২৬ জানুয়ারি জাতিয় ছুটির দিন হিসেবে গণিত হয়। ভারতের সংবিধান বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংবিধান। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সঙ্গবিধানের বিভিন্ন অঙ্গস চয়ন করে তৈরি হয়েছে এই সঙ্গবিধান। ভারত এই যে পাঁচ বছর অন্তর সরকার বেছে নেওয়ার অধিকার পেয়েছে তা পণতান্ত্রিক দেশ বলেই।

 

সারা দেশে অত্যন্ত আড়ম্বড়ের সঙ্গে পালিত হয় প্রজাতন্ত্র দিবস। রাজধানী দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি পতাকা উত্তোলন করেন। জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন তিনি। ভারত যে সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্রের সম্মান ১৯৭৬ সালের ৪২ তম সঙ্গবিধানের সঙ্গশোধনের মাধ্যমে পেয়েছে তা রক্ষার প্রতিজ্ঞা করেন। করা হয় দেশের জন্য শহিদ হ ওইয়া বীর সেনাদের স্মৃতিচারণ।

ভারতীয় স্থল, আকাশ ও নৌবাহিনির বিভিন্ন রেজিমেন্টের সেনারা রাজধানীর রাজপথে কুচকাওয়াজ করেন। মহাত্মা গান্ধি, জওহরলাল নেহেরু, লাল বাহাদুর সাস্ত্রী, ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধির সহ একাধিক প্রণম্য ব্যক্তিত্বের স্মৃতিবিজরিত রাজঘাট থেকে শুরু করে গান্ধিঘাট পর্যন্ত চলে এই কুচকাওয়াজ। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের গান বাজানো হয়। হয় জাতীয় সঙ্গীত। সব মিলিয়ে ভারতের বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যর রূপ এদিন দেখায় দিল্লির রাজপথ।

শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যকে স্মরণ করে প্রতি বছর ২৯ শে জানুয়ারি বিজয় চকে বিটিং রিট্রিট অনুষ্ঠান চার দিনব্যাপী আয়োজিত করা হয়। এই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি তাঁর দেহরক্ষীদের সঙ্গে একটি অশ্বারোহী ইউনিটে আসেন। যখন প্যারেড করা হয় তখন ‘বিটিং দ্য রিট্রিট’ জাতীয় গৌরবের সম্মান বাড়িয়ে তোলে।

এই বছর কোভিডের কারণে প্রজাতন্ত্র দিবসে বেশ কিছু নয়ম জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে যতটা সম্ভব কম মানুষ সশরীরে উস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত করতে পারবেন। আগে যেখানে ২৪ হাজার লোক এই কুচকাওইয়াজে অঙ্গশ নিতেন এখন তা কমিয়ে করা হয়েছে ৫ থেকে ৮ হাজার। ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু ও কিশোররা অঙ্গস নিতে পারবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here