‘সান্তাক্লজ’ এই নামটাই প্রত্যেক শিশুর কাছেই খুব উত্তজনার এবং একই সঙ্গে বেশ রহস্যেরও বটে। বড়দিনের ঠিক আগের রাতে বারোটা বাজলেই নাকি উপহারের ঝুলি নিয়ে প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি হাজির হন সান্তা। আর প্রত্যেকের জন্য চুপিসারে রেখে যান নানা উপহার। ছোটবেলায় প্রত্যেক শিশুই সরল মনে এই কাহিনিকেই বিশ্বাস করত। আর অপেক্ষা করে থাকত তাঁর প্রত্যাশিত গিফট পাওয়ার। কিন্তু এই কাহিনি যে নিছকই গল্পকথা তা বড় হতেই বোঝা যায়। উপলব্ধি করা যায় যে, তখন বাবা-মা’ই ছিলেন আসল সান্তা।

কিন্তু কে এই সান্তা ক্লজ ? কেনই বা শিশুদের উপহার দেন তিনি? আর তাঁর পোশাকের রং লাল কেন? আর যদি এসব গল্প কথাও হয় তাহলে এর উৎস কোথায়? এই সব প্রশ্ন বড়বেলাতেও পিছু ছাড়ে না। আসুন তাহলে আলোচনা করা যাক লাল টুপি-জামা পরা সান্তা ক্লজের ব্যাপারে।

যিশু খ্রিস্টের মৃত্যুর ২৮০ বছর পরে রোমের মাইরাতে জন্ম হয় সেইন্ট নিকোলাসের। ছেলেবেলায় বাবা-মাকে হারান নিকোলাস। কিন্তু তিনি ভরসা ও বিশ্বাস রেখেছিলেন যীশু খ্রিস্টের ওপরে। নিজে অনাথ হওয়ায় গরীব, অনাথ শিশুদের অত্যন্ত ভালবাসতেন তিনি। ঠিক সেই কারণেই গরীব শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে তাঁদের উপহার দিয়ে বেড়াতেন সেইন্ট নিকোলাস। গভীর রাতে নিজেকে আড়াল রেখে শিশুদের উপহার দিতেন তিনি, যাতে তাঁকে চেনা না যায়। সেই থেকেই ‘সান্তা’ নামে পরিচিত হয়েছিলেন নিকোলাস।

সান্তার পোশাক কেন লাল?এবার আসা যাক সেই বিষয়ে। সান্তা ক্লজ বলতেই আমাদের সামনে ভেসে ওঠে লাল জামা-টুপি পরা, লম্বা সাদা দাড়িওয়ালা এক ব্যক্তির প্রতিকৃত। আসলে সান্তার কোন নির্দিষ্ট রঙের পোশাক ছিল না। আগে বাদামী এবং আরও অন্য রঙের পোশাকে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তাহলে লাল পোশাকেই পরিচিত কেন সান্তা?

বর্তমান দিনে সান্তার যে চেহারা তা তৈরি করেন থমাস নাস্ট। ‘হারপার উইলকি’ নামে একটি পত্রিকার জন্য লাল রঙের পোশাকে সান্তাকে আঁকেন তিনি। তারপর থেকেই এই পোশাকেই বিপুল জনপ্রিয় হয় সান্তা। যদিও অনেকে মনে করেন যে কোকা কোলার একটি বিজ্ঞাপনে প্রথম সান্তাকে লাল রঙের পোশাকে দেখা যায়। কিন্তু তা সঠিক নয়। ১৯৩১ সালে কোকা কোলার ওই বিজ্ঞাপনটি আসে। কিন্তু তার আগেই সান্তাকে লাল পোশাকে এঁকেছিলেন থমাস নাস্ট। সান্তাকে সবুজ পোশাকেও এঁকেছিলেন তিনি। কিন্তু লাল পোশাকের সান্তাই বেশি জনপ্রিয় হয়ে যায়। শুধু পোশাকই নয় সান্তার চেহারারও রদবদল করেন থমাস। আগে সান্তার চেহারা ছিল খুবই খুদে। পরবর্তীকালে সান্তার চেহারাকে বড় করেন নাস্ট। তাঁর আঁকা সান্তার প্রতিকৃতই এখন পরিচিত সান্তা ক্লজ হিসাবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here