আগে যেকোনও অনুষ্ঠানে কলাপাতায় খাওয়ার রেওয়াজ ছিল। তবে শুধু এ রাজ্যে নয়, দক্ষিণীরাও বিভিন্ন উৎসবে কলাপাতায় খাবার পরিবেশন করে থাকেন। এই অভ্যাস পরিবেশবান্ধবও বটে। কলকাতার পাইস হোটেলে বরাবরই কলাপাতায় খাবার পরিবেশনের রেওয়াজ। ইদানীং বিভিন্ন বাঙালি রেস্তরাঁতেও কলাপাতায় খাবার দিতে দেখা যায়। শুধু দেখতে ভাল লাগে বলেই কি কলাপাতায় খাবার পরিবেশন করা হয়? না কি এর সঙ্গে স্বাস্থ্যেরও যোগ রয়েছে?
১) রীতি, ঐতিহ্য এবং পরিবেশ রক্ষা ছাড়াও কলাপাতায় খাওয়ার বেশ কিছু স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে। কাচ, স্টিল বা প্লাস্টিকের প্লেট ভাল ভাবে পরিষ্কার না করলে সেখান থেকে খাবারে ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাস ছড়াতে পারে। কিন্তু কলাপাতায় খেলে সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ। এ ছাড়াও কলাপাতার অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল গুণ খাবারে যদি কোনও ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়া থাকে, তা-ও ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
২) তা ছাড়া কলাপাতায় ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে। পাতার উপর গরম খাবার রাখলে খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট তো হয় না, বরং তার স্বাদ বৃদ্ধি পায়।
৩) অনেকেরই ধারণা কলাপাতার সংস্পর্শে গরম খাবার এলে, তার স্বাদ এবং গন্ধ নাকি পাল্টে যায়। সাধারণ খাবারও নাকি হয়ে ওঠে অমৃতসমান। এ ছাড়া কলাপাতায় খাবার খেলে হজমশক্তিও বাড়ে। কলাপাতায় উপস্থিত পলিফেনল শরীরে হজমে সাহায্যকারী উৎসেচকগলির ক্ষরণ বৃদ্ধি করে।
৪) প্লাস্টিক বা থার্মোকলের প্লেট পরিবেশের জন্য আবর্জনা ছাড়া আর কিছুই নয়। এই ধরনের আবর্জনা মাটি বা জলের সঙ্গে মিশলে তা পরিবেশের তো বটেই, প্রাণীজগতের জন্যেও ভাল নয়। সেই দিক থেকে কলাপাতা ব্যবহার করা নিরাপদ।
৫) থার্মোকল বা প্লাস্টিকের প্লেটে গরম খাবার রাখলে তা থেকে রাসায়নিক বিক্রিয়া হওয়া অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু কলাপাতায় দীর্ঘক্ষণ গরম খাবার রেখে দিলেও এই ধরনের ভয় থাকে না।