ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে হাতে ফোন নিয়ে নেন। মোবাইলটি হাতে নিয়ে শুরু হয় হোয়াট্সঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ফেসবুক, ইমেলে ঢুঁ দেওয়ার পালা। ঘুম থেকে উঠেই ৩০ মিনিট মতো সময় চলে যায় এই সমস্ত কাজেই। এই আসক্তিতে রয়েছেন প্রায় অনেক মানুষই। বিভিন্ন গবেষণা জানাচ্ছে, ঘুম থেকে উঠেই মোবাইল ঘাঁটার অভ্যাস চোখের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। ঘুম ভেঙে গিয়েছে মানেই আপনি সজাগ, তা কিন্তু নয়। ঘুমের ঘোর কাটতে সময় নেয়। বেশ অনেকক্ষণ ঘুম লেগে থাকে চোখে। সেই নিদ্রাচ্ছন্ন চোখে যদি হঠাৎ করে মোবাইলের নীল আলো এসে পড়ে, তা হলে তা চোখের জন্য ক্ষতিকর।
ভবিষ্যতে চোখের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তবে ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষা করার দরকার নেই। এই অভ্যাসের ফলে ‘ড্রাই আইজ’-এর সমস্যা ক্রমশ বাড়ছে। ছোট থেকে বড় সকলেই এই রোগের শিকার। যত সময় যাচ্ছে সমস্যা তত ছড়াচ্ছে। প্রতিরোধ করার কি কোনও উপায় রয়েছে? চক্ষু চিকিৎসক শান্তনু মণ্ডল বলেন, ‘‘অভ্যাসে রাশ টানা ছাড়া এই সমস্যা প্রতিরোধের কোনও উপায় নেই। মোবাইলের ব্যবহার কমাতে হবে। তা হলেই চোখ সুরক্ষিত থাকবে। পাশাপাশি এটাও ঠিক যে প্রযুক্তিনির্ভর জীবনে সব ক্ষেত্রে যন্ত্রের ব্যবহার করতেই হয়। এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। সে ক্ষেত্রে মাঝেমাঝে চোখের বিশ্রাম নিতে হবে। ড্রপ ব্যবহার করতে হবে।’’ সাম্প্রতিক বেশ কিছু গবেষণা বলছে, শুধু চোখ নয়, ঘুম ভাঙার পর মোবাইল দেখার অভ্যাসে মানসকি স্বাস্থ্য বিঘ্নিত হয়। মানসিক অস্থিরতাও দেখা দেয়।
চোখের ক্ষতির সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঘাত ঘটে কাজেরও। সকালে উঠেই যদি আপনি আপনার সারা দিনের কাজের তালিকা নিয়ে ভাবতে থাকেন, অথবা নেটমাধ্যমে আপনার চারপাশের মানুষের কার্যকলাপের খবর পেতে থাকেন, এতে আপনার মানসিক স্থিতি কমতে থাকে। এই খবরগুলি আপনার অস্থিরতা বাড়িয়ে দেয়। কোনও কাজের প্রতি মন দিতে দেয় না। খুব সমস্যা না থাকলে রাতে ফোনটি বন্ধ করে রাখতে পারেন। সকালে উঠে পরিষ্কার হয়ে, ধীরেসুস্থে তার পরে ফোন ধরুন। এতে আপনার শরীর এবং মন দুই-ই সুস্থ থাকবে।