ইস্টবেঙ্গলে বাঙালি ফুটবলার খুঁজতে গেলে আতস কাঁচের প্রয়োজন পড়ে। হাতেগোনা যে কয়েক জন রয়েছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সৌভিক চক্রবর্তী। বাঙালি এই মিডফিল্ডার যে ভাবে শেষ দুই বছর লাল-হলুদকে সার্ভিস দিয়েছেন তাঁর জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়।
দলকে যেমন নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকে তেমনই শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবের খারাপ সময়ে বুক চিতিয়ে লড়ে গিয়েছেন লাল-হলুদ জার্সি গায়ে। ২০২২-২৩ মরসুমে খুব বেশি মাঠে না নামলেও কার্লেস কুয়াদ্রাতের অন্যতম প্রিয় ছাত্র গত মরসুমে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠে। ২০২৩-২৪ মরসুমে ১৯ ম্যাচে সর্বমোট খেলেছেন ১৩৫১ মিনিট। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে এই মরসুমেও। চলতি আইএসএল-এ ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে সুপার কাপ জেতা সৌভিক খেলেছেন ১০টি ম্যাচে, যার মধ্যে ৯টিতে তিনি ছিলেন প্রথম একাদশে। মাঠে কাটিয়েছেন মোট ৭৯১ মিনিট। ডিফেন্সিভ মিডিও হয়েও সৌভিকের খেলা অত্যন্ত পরিষ্কার। যেখানে প্রতি ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের তিন-চারটি হলুদ কার্ড বাধা, সেখানে সৌভিক দেখেছেন মাত্র একটি। এই সৌভিক-ই হাতছাড়া হওয়ার পথে।
লাল-হলুদের মাঝমাঠের এই কাণ্ডারীর দিকে এ বার হাত বাড়িয়েছে হায়দরাবাদ এফসি এবং মুম্বই সিটি। অর্থনৈতিক ডামাডলের কারণে এই মরসুমে শেষ মুহূর্তে কোনওক্রমে ঘর গুছিয়েছে হায়দরাবাদ। ভারতীয় ফুটবলকে দীর্ঘ সময়ে সমৃদ্ধ করে এসেছে নিজামের শহর। সেই প্রদেশের প্রতিনিধি হয়ে আইএসএল জয়ী এই ক্লাব কখনওই নিজেদের অতীত গৌরব ক্ষূন্য হোক তেমন দল গড়বে না তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন বর্তমান মালিক গোষ্ঠী। সেই কারণে শীতকালীন ট্রান্সফার উইন্ডো থেকেই আগামী মরসুমের পরিকল্পনা নিয়ে ঘর গোছাতে নেমেছে হায়দরাবাদ। নিজেদের প্রাক্তন তারকাকে দলে নিতে কোমর বেঁধেছে তারা।
নিজামের শহরের দলটির পাশাপাশি আইএসএল জয়ী তারকাকে পেতে মরিয়া মুম্বই সিটি এফসিও। হায়দরাবাদের মতোই বাঙালি মিডিওর কাছে প্রস্তাব এসেছে আইএসএল-এর অন্যতম সফল দলটির কাছ থেকে। হায়দরাবাদের মতো মুম্বইও সৌভিকের প্রাক্তন ক্লাব।
সৌভিকের সঙ্গে সরাসরি এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন সৌভিক। তিনি বলেছেন, “এই বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। এখন আমি ইস্টবেঙ্গলে খেলছি। ইস্টবেঙ্গলের সাফল্যের জন্য যা যা দরকার তাই তাই করব।” উল্লেখ্য, নিজের বক্তব্যের মধ্যে একবারও তিনি বললেন না যে কথা হচ্ছে না কিংবা কথা হচ্ছে। সম্পূর্ণ বিষয়টাই এড়িয়ে যেতে চাইলেন সৌভিক।