চকলেট বর্তমান সময়ের সেরা স্ট্রেস বুস্টার। প্রিয়জনকে চকলেট দিলে কী খুশি যে হয় তা তো আর বলে দিতে হয় না। অথচ একটা সময় ছিল যখন কেউ চকলেট সম্পর্কে জানত না। পর্দার আড়াল থেকে বিশ্বের সামনে উন্মোচিত হওয়া পর্যন্ত চকোলেটের যাত্রাপথও অত্যন্ত আকর্ষণীয়। চকলেট কখন কীভাবে তৈরি হয়েছিল, কোথা থেকে এসেছে তা জানলে অবাক হতে হয়। আজ চকলেট দিবসে এর ইতিহাস জেনে নেওয়া যাক। কিছু বিশেষজ্ঞ বলেছেন যে চকলেট শব্দটি আগে কেউ শোনেননি। শব্দটি মায়ান এবং অ্যাজটেক সভ্যতা থেকে এসেছে। অ্যাজটেক ভাষায় চকলেট মানে টক বা তিক্ত।
চকলেট ৪০০০ বছরের পুরানো। এটি মেক্সিকোর লোকেরা আবিষ্কার করেছিল। তারাই প্রথম আমাজন অরণ্যে চকলেট গাছ দেখে এবং তা থেকে চকলেট তৈরি শুরু করে। তারপর এটি একটি পানীয় হিসাবে গ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া চকলেট আগে মুদ্রা হিসাবেও ব্যবহৃত হতো। মেক্সিকোতে আবিষ্কৃত চকলেটের ইতিহাস খুবই আকর্ষণীয়। ১৫২১ সালে স্প্যানিশ রাজা অ্যাজটেক সাম্রাজ্যকে পরাজিত করেন এবং মেক্সিকোকে নিজের সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। এটি নিউ স্পেন নামে পরিচিতি লাভ করে। এভাবেই মেক্সিকোর চকলেট পৌঁছে গেল স্পেনে। স্পেনের রাজার চকোলেটের স্বাদ এতটাই পছন্দ হয়েছিল যে তিনি কোকোর বীজ স্পেনে নিয়ে যান। এই স্বাদ স্প্যানিয়ার্ডদের মধ্যে জনপ্রিয় হতে বেশি সময় নেয়নি।
চকলেট যখন স্পেনে প্রবেশ করেছিল, তখন এর মধ্যে ঔষধি গুণ রয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়েছিল। জ্বর হলেই চকলেট খাওয়ার পরামর্শ দিতেন সেখানকার চিকিৎসকরা। এটি পেনকিলার হিসাবেও ব্যবহৃত হত এবং হজমের সমস্যা থাকলেও তাতে চকলেট খুব উপকারী বলে বিবেচিত হত। এমন নয় যে চকোলেট শুধুমাত্র মেক্সিকো বা স্পেনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। আসলে, কফি এবং চায়ের আগে চকলেট ইউরোপে পৌঁছেছিল।
১৮৫০ সালে, একজন ব্যক্তি প্রথম সলিড চকলেট তৈরি করেছিলেন। এটি কোকো পাউডার এবং চিনি মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। এরপর থেকে চকলেটের চাহিদা বাড়তে থাকে। এখান থেকেই আধুনিক চকলেটের জন্ম। আপনি জানলে অবাক লাগে যে চকলেটের উপর বিশেষভাবে একটি বই লেখা হয়েছে। যার লেখক সোফি এবং মাইকেল। বইটির নাম True History of Chocolate. এই বইয়ে চকলেটকে ঈশ্বরের খাদ্য হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। ১৯ শতকে চকোলেট মানুষের বাড়িতে এসেছিল এবং আজ এটি আবাল বৃদ্ধ বনিতার এটি অত্যন্ত পছন্দের খাদ্যবস্তু।