বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অনেকেরই স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে। কোনও কাজের সিদ্ধান্ত তারা কিছুতেই একবারে নিতে পারেন না। এই রোগকেই কিন্তু বলা হয় ডিমেনশিয়া। ভাবনা চিন্তার ক্ষেত্রেও নানা সমস্যা দেখা দেয় এই রোগে।
ডিমেনশিয়া রোগের কিন্তু তেমন কোনও চিকিৎসা নেই। ডাক্তারের পরামর্শ মতো ওষুধ খাওয়া এবং মানসিক চাপ কমানো, খাওয়া-দাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দিলে এই রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে। কী খেয়ে কমাবেন এই রোগের ঝুঁকি, জেনে নিন বিস্তারিত।
কেন বাড়ে এই রোগের ঝুঁকি উচ্চ রক্তচাপ, শ্রবণের সমস্যা, কিংবা প্রচুর পরিমাণে ধূমপান করলে, ওজন বেশি থাকলে, মানসিক অবসাদ, পরিশ্রম না করলে কিংবা ডায়াবেটিস থাকলে, প্রচন্ড পরিমাণে মদ খেলে কিন্তু এই ডিমেনশিয়া রোগের ঝুঁকি বাড়তে থাকে। যদি আপনি ডিমেনশিয়া রোগের ঝুঁকি এড়াতে চান তাহলে অবশ্যই নিত্যদিনকার খাদ্য তালিকায় এই খাবারগুলি রাখবেন।
সবুজ শাকসবজি
ডিমেনশিয়া রোগের ঝুঁকি এড়াতে নিত্যদিন সবুজ শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে, ফোলেট, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এগুলি খেলে আপনার মানসিক চাপ কমবে। সেই সঙ্গে আপনি পালংশাক খাওয়ার চেষ্টা করুন। পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিইনফ্লেমেন্টরি বৈশিষ্ট্য থাকে। পালংশাক দিয়ে স্যালাড করে খেতে পারেন। আবার তরকারি করেও খেতে পারেন।
বেরি
ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি মতো বেরি জাতীয় ফলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। বিশেষ করে এতে কিন্তু ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে। যা মস্তিষ্কের কোষের কোনও ক্ষতি হতে দেয় না। তাই আপনি কিন্তু নিত্যদিন ব্রেকফাস্টে চার-পাঁচটা হলেও বেরি খান, তাই এই রোগের ঝুঁকি কমবে। যদি পারেন দই দিয়ে খেতে পারেন এটি।
বাদাম
বাদাম খেলে আপনার রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও বাড়বে। বাদাম ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যেমন কাজুবাদাম, আখরোট খেলে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে। বড় রোগের ঝুঁকি কমবে। ডিমেনশিয়া রোগের ঝুঁকি কমাতে পারবেন।
মাছ
স্যামন, ম্যাকরেল, সার্ডিন মাছের মতো মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। তাছাড়াও থাকে আন্টিঅক্সিডেন্ট। যা আপনার ডিমেনশিয়া রোগের ঝুঁকি কমায়। সপ্তাহে অন্তত দু’বার হলেও এই মাছ খাওয়ার চেষ্টা করুন।
গোটা শস্য
গোটা শস্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। যেমন- বাদামী চাল, কুইনোয়া, গম, আটা ইত্যাদি যদি খান তাহলে কিন্তু আপনার ডিমেনশিয়া রোগের ঝুঁকি কমবে।
জলপাইয়ের তেল
নিত্যদিনকার খাদ্য তালিকায় রাখুন জলপাইয়ের তেল। এতে মনোস্যাচুয়েটেড ফ্যাট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা আপনার মানসিক চাপ কমাবে। রান্নায় যদি জলপাইয়ের তেল দেন, তাহলে কিন্তু এটি খেতেও খুব ভালো লাগে। আবার স্যালাডে খেতে পারেন। যদি আপনি শাকসবজি ভাজেন, তাহলেও কিন্তু এই জলপাইয়ের তেল দিয়ে ভাজতে পারেন। যা খাওয়াও স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো।
হলুদ
হলুদে প্রচুর পরিমাণে কারকিউমিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা মস্তিষ্ক ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি আপনার ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করবে।
ডার্ক চকোলেট
ডিমেনশিয়া রোগের ঝুঁকি কমাতে খেতে পারেন ডার্ক চকোলেট। এতে ফ্ল্যাভোনয়েড, ক্যাফেইন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা আপনার স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে শরীর সুস্থ রাখবে।
গ্রিন টি
গ্রিন টি যে শুধু আমাদের ওজন কমাতেই সাহায্য করে তা কিন্তু নয়। ডিমেনশিয়া রোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে এই চা। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। প্রত্যেকদিন এক থেকে দু কাপ গ্রিন টি যদি আপনি খান তাহলে আপনার ঠান্ডা লাগবে না। জ্বর, সর্দি-কাশির মত সমস্যাও দূর হবে। আবার গ্রিনটি আপনি লেবু ও অল্প পরিমাণে মধু দিয়ে খেতে পারেন।