হিন্দু ধর্মে, শিব এবং হনুমানকে সবচেয়ে শক্তিশালী দেবতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এদের পুজো করলে জীবনের সকল দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। শনিদেব একবার হনুমানজির মুখোমুখি হয়েছিলেন। তখন কী হয়েছিল জানেন?
কিংবদন্তি অনুসারে, শনিদেব নিজের ক্ষমতার জন্য অত্যন্ত গর্বিত ছিলেন। তিনি মনে করতেন তাঁর থেকে শক্তিশালী আর কেউ নেই। এই অহংকারের বশেই ন্যায়াধীশ হনুমানজির সঙ্গে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই সময় বজরংবলী ভগবান শ্রী রামের উপাসনায় মগ্ন ছিলেন।
সেই সময় হনুমানজির দিকে শনিদেব কুদৃষ্টি নিক্ষেপ করেন, কিন্তু সংকটমোচনের উপর এর কোনও প্রভাব পড়েনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শনিদেব হনুমানজির ধ্যান ভঙ্গ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতেও তিনি অসফল হন। শনিদেবের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
এতে আরও ক্রুদ্ধ হয়ে শনিদেব বজরংবলিকে বলেন, “হে বানর, চোখ খোলো। আমি শনিদেব এসেছি তোমার সুখ শান্তি বিনষ্ট করতে। এই পৃথিবীতে এমন কেউ নেই যে আমার মুখোমুখি হতে পারে।” উত্তরে হনুমানজি খুব বিনীতভাবেই বলেন, “মহারাজ, আপনি কে?” একথা শুনে শনিদেব আরও রেগে গেলেন।
ক্রুদ্ধ শনিদেব তখন বলেন, “এখন আমি তোমার রাশিতে প্রবেশ করতে যাচ্ছি, তাহলেই বুঝবে আমি কে।” এবারও হনুমানজি শনিদেবকে অন্য কোথাও চলে যেতে বলেন এবং তাঁকে শ্রীরামচন্দ্রকে স্মরণ করতে দেওয়ার প্রার্থনা করেন। শনিদেব এবার প্রচন্ড রেগে হনুমানজির হাত ধরে নিজের দিকে টানতে লাগলেন, কিন্তু পারলেন না।
এর পর শনি যখন ভয়ঙ্কর রূপ ধরে আবার হাত ধরার চেষ্টা করেন তখন হনুমানজি রেগে যান এবং শনিদেবকে লেজে জড়িয়ে নেন। তখনও শনিদেবের অহংকার যায়নি। ওই অবস্থাতেই শনিদেব হনুমানজিকে বলেন, “শুধু তুমিই নও, তোমার প্রিয় শ্রীরামও আমার কোনও ক্ষতি করতে পারবেন না।” এই কথা শুনে হনুমানজী শনিদেবকে লেজে জড়িয়ে বারবার পাহাড়ে থাকা গাছে ছুড়ে মারেন। তাতে শনিদেব গুরুতর আহত হন।
এরপর শনিদেব নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং বলেন যে তিনি হনুমানজির কোনও ভক্তকে কষ্ট দেবেন না। তাই যারা মন থেকে বজরংবলীর পুজো করেন তাদের পীড়ন করেন না।