দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে শুধু কৃষক, সাধারণ মানুষ নয়, রাজপরিবাররাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। মান্ডির রানি ললিতা কুমারী যিনি খয়েরগড়ি নামে পরিচিত তিনি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া বিপ্লবীদের বন্ধু হয়ে সাহায্য করেছিলেন। হিমাচলের পার্বত্য অঞ্চলের রাজপরিবারের প্রথম নারী ইনি যিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। বিপ্লবীদের সাহায্য করার অভিযোগে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে রাজ্য থেকে বহিষ্কার করেছিল। পরে, ললিতা কুমারী জাতীয় মহিলা কংগ্রেসের সভাপতি হন।

রানী খয়েরগড়ী ছিলেন রাজা ভবানী সেনের স্ত্রী। ১৯১২ সালে ভবানী সেনের মৃত্যুর পর রাজমহলের জীবন ছেড়ে বিপ্লবের পথে যাত্রা শুরু করেন তিনি। যোগ দেন লালা লাজপত রায়ের বিপ্লবী সংগঠনে।

রানি খয়েরগাড়ির সুরক্ষায়, বিপ্লবীরা অস্ত্র সংগ্রহ শুরু করেছিলেন। এ ছাড়া বোমা তৈরির উপকরণও সংগ্রহ করা হয়েছিল। পঞ্জাবের বিপ্লবীদের তৈরি বোমাও আনানো হয়েছিল। গদর সংগঠনের মধ্যে ছিলেন মিয়া জওহর সিং, সিধু খারওয়াড়া, বদ্রিনাথ, সারদারাম, জ্বলা সিং, দলিপ সিং এবং লঙ্গু রাম প্রমুখ। রানি খয়েরগড়ী এঁদের প্রধান সহযোগীর ভূমিকায় ছিলেন। আন্দোলনের খরচ চালাতে তিনি তহবিল দিতেন। একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য নাগচালায় সরকারি কোষাগার লুট করা হয়। ঘটনার সময় পাঞ্জাবের দলিপ সিং এবং বিপ্লবী নিধান সিং ধরা পড়েন। পুলিশের অত্যাচারে ভয় পেয়ে তারা ফাঁস করে দেন সংগঠনের গোপন কথা। ফলে পুলিশ মিয়াঁ জওহর সিং, বদ্রীনাথ, সারদারাম, জ্বালা সিং এবং লঙ্গুকে কারারুদ্ধ করে। রানি খয়েরগড়িকে রাজ্য থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।

এরপর লখনউতে থাকার সময় রানি খয়েরগড়ি কংগ্রেসে যোগ দেন এবং অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৩৮ সালে রাজা যোগীন্দ্র সেনের অনুরোধে, রানি খয়েরগড়ি মান্ডি রাজ্যের রজত জয়ন্তী উদযাপনে অংশগ্রহণের জন্য লখনউ থেকে মান্ডির উদ্দেশ্যে রওনা হন। জোগিন্দরনগরে পৌঁছে বিপ্লবীদের সাথে দেখা করার পর গ্রামবাসীদের পাঠানো খাবার খেয়ে তিনি কলেরায় আক্রান্ত হন এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই ললিতা কুমারী মারা যান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here