বক্স অফিসে রীতিমতো ঝড় তুলেছিল পুষ্পা- দ্যা রাইস। এই ছবি মুক্তি পেয়েছিল ২০২১ সালে। তারপর থেকেই জল্পনা ছিল দ্বিতীয় অংশ মুক্তি নিয়ে। দর্শক মহলে জনপ্রিয় হয়েছিল অল্লু অর্জুন ও রশ্মিকা মনদানা জুটি। বহু অপেক্ষার পর অবশেষে গত রবিবার মুক্তি পেয়েছে ‘পুষ্পা ২’ ছবির প্রথম ঝলক। তার পরেই উন্মাদনা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে দর্শকের মধ্যে। অল্লু অর্জুনের মুখেও বসিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘ওয়াইল্ডফায়ার হুঁ’র মতো সংলাপ। তবে প্রথম ঝলকে নজর কেড়েছেন অন্য এক অভিনেতা। দু’-এক সেকেন্ডের জন্য ধরা দিয়েছেন তিনি। সারা মুখে রং মাখা। তাতেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন তিনি।
‘পুষ্পা ২’ মুক্তির আগে অল্লুর একটি লুক নিয়ে সমাজমাধ্যমে ঝড় উঠেছিল। সেই ছবিতে অল্লুর মুখে নীল রং। মেকআপ করে অল্লুকে যেন চেনাই যাচ্ছে না। ‘পুষ্পা ২’-র প্রথম ঝলকে প্রায় একই রকম মেকআপে ধরা দিয়েছেন এক তারকা। তবে তাঁর মাথা অর্ধেক কামানো। কে সেই অভিনেতা?
‘পুষ্পা ২’ ছবির প্রথম ঝলকে নতুন মুখ দেখার পর অনেকেই বেশ বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। অল্লু এবং ফাহাদ ফাসিল ছাড়াও এই ছবিতে যে তৃতীয় এক অভিনেতা মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন, সে ধারণা ছিল না কারও। তবে তৃতীয় সেই অভিনেতা যে কয়েক সেকেন্ডের অভিব্যক্তি দিয়েই নজর কেড়েছেন তা বলা বাহুল্য। সূত্রের খবর, সেই অভিনেতা নাকি বলি অভিনেতা সইফ আলি খানের ‘পুত্র’।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় তেলুগু ভাষার ছবি ‘দেভারা’। এই ছবিতে এনটি রামারাও জুনিয়রের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন জাহ্নবী কপূর এবং সইফ আলি খান।
‘দেভারা’ ছবিতে সইফের পুত্রের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তারক পোন্নাপ্পা নামে এক দক্ষিণী তারকাকে। ‘পুষ্পা ২’-র নতুন মুখ আর কেউ নন, সইফের ‘পুত্র’ সেই তারক।
১৯৯১ সালের ৭ জুন কর্নাটকের বেঙ্গালুরুতে জন্ম তারকের। সেখানেই বাবা-মা এবং বোনের সঙ্গে থাকতেন তিনি। পরিবারের কেউ অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তবুও ছোট থেকে অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়তে থাকে তাঁর।
বেঙ্গালুরুর স্কুল এবং কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করেন তারক। বেঙ্গালুরুর একটি কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন তিনি। অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার গড়ে আদৌ সফল হবেন কি না তা নিয়ে মনে নানা রকম প্রশ্ন জাগত তাঁর।
স্নাতক হওয়ার পর বেঙ্গালুরুর একটি কলেজ থেকে এমটেক করেন তারক। উচ্চশিক্ষার জন্য পড়াশোনা চালিয়ে গেলেও টুকটাক অভিনয়ও করছিলেন তিনি।
কলেজে পড়াকালীন মডেলিং করতে শুরু করেন তারক। প্রায় চার বছর মডেলিংজগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। এই সময়ের মধ্যেই ফ্যাশনের দুনিয়ায় নিজের পরিচিতি তৈরি করে ফেলেন তিনি।
ফ্যাশন সরণিতে হেঁটে প্রশংসা কুড়োতে শুরু করেন তারক। শুধু তা-ই নয়, মডেলিংয়ের পাশাপাশি নামী সংস্থার বিজ্ঞাপনী প্রচারেও অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
মডেল হিসাবে পরিচিত হওয়ার দরুন বড় পর্দায় অভিনয়ের সুযোগ পান তারক। ২০১৭ সালে ‘আজারামারা’ নামের কন্নড় ভাষার একটি ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন তিনি।
২০১৮ সালে ‘বৃহস্পতি’ নামে কন্নড় ভাষার একটি ছবিতে নেতিবাচক চরিত্র পর্দায় ফুটিয়ে তোলেন তারক। পর পর একাধিক কন্নড় ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় তারককে। কখনও পার্শ্বচরিত্রে আবার কখনও মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। কিন্তু অভিনয়ের জগতে তেমন সফল হতে পারছিলেন না তারক।
২০১৮ সালে সাফল্য ছুঁয়ে ফেলে তারককে। সেই বছর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় কন্নড় ছবি ‘কেজিএফ: চ্যাপ্টার ১’। যশ অভিনীত এই ছবিটি বক্স অফিসে ভাল ব্যবসা করে। এই ছবিতে অভিনয় করে নজর কাড়েন তারক।
২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া যশের ছবি ‘কেজিএফ: চ্যাপ্টার ২’-তেও অভিনয় করতে দেখা যায় তারককে। এনটি রামারাও জুনিয়র, যশের মতো জনপ্রিয় দক্ষিণী তারকাদের একাধিক ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন তারক।
চলতি বছরে তারকের কেরিয়ারে জুটতে চলেছে নয়া পালক। অল্লুর সঙ্গে ‘পুষ্পা ২’ ছবিতে অভিনয় করে কেরিয়ারে নতুন মাইলফলক তৈরি করতে চলেছেন তিনি।
২০২০ সালে রাধিকা নানাইয়া নামের এক তরুণীকে বিয়ে করেন তারক। ফিল্মজগতের সঙ্গে যুক্ত নন রাধিকা।
সমাজমাধ্যমেও কম সময়ের মধ্যে নিজের পরিচিতি তৈরি করে ফেলেছেন তারক। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামের পাতায় তাঁর অনুগামীর সংখ্যা ১৮ হাজারের গণ্ডি পার করে ফেলেছে।