ভারত অত্যন্ত ধর্মীয় এবং আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের সঙ্গে যুক্ত একটি দেশ। ধর্ম এবং দেব-দেবীতে বিশ্বাস থাকলে মানুষ শুভ-অশুভ শক্তিতেও বিশ্বাস করে। দেশে এমন অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে অশুভ শক্তির আধিপত্য বা ভূত-প্রেত রয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়। এরকম কিছু ভুতুড়ে জায়গার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত স্থান হল রাজস্থানের ভানগড় দুর্গ।
এই দুর্গটি আলোয়ার জেলার আরাবল্লী পাহাড়ে সরিস্কা অভয়ারণ্যের সীমানায় অবস্থিত। ভানগড় দুর্গ প্রথম দর্শনেই এক অদ্ভুত ভীতিকর অনুভূতির সৃষ্টি করে। এটি ভূতের আবাসস্থল বলে শোনা যায়। এই কারণেই ধীরে ধীরে গ্রামের জনসংখ্যা কমে গিয়েছে। ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ স্থানীয় লোকজন এবং পর্যটকদের রাতে দুর্গে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়েছে। অনেক সময় পর্যটকরা ভানগড় দুর্গে অস্বাভাবিক ঘটনার কথা নিশ্চিত করেছেন। এমনিও দুর্গের অবস্থাও এমন যে হঠাৎ দেখলে যে কেউ ভয় পেয়ে যাবে।
ভানগড় গ্রামে বর্তমান দুর্গটি ঐতিহাসিক ধ্বংসাবশেষের জন্যই পরিচিত। প্রতি বছর শত শত পর্যটক দুর্গ দেখতে এখানে আসেন। এখানে কিছু হাভেলির ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। সূর্যোদয়ের আগে এবং সূর্যাস্তের পরে কাউকে ভানগড় দুর্গে থাকতে দেওয়া হয় না। ভানগড় দুর্গের ইতিহাস সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে বলা হয় যে আমেরের রাজা ভগবত দাস ১৫৭৩ সালে তাঁর ছোট ছেলে মাধো সিং-এর জন্য এটি নির্মাণ করিয়েছিলেন।
ভানগড় কেল্লা নিয়ে অনেক গল্প শোনা যায়। একটি গল্প অনুসারে, দুর্গের ছায়া গ্রামে বসবাসকারী এক তপস্বীর বাড়িতে পড়েছিল। যার কারণে তপস্বী দুর্গটিকে অভিশাপ দিয়েছিলেন। সেই অভিশাপে দুর্গ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। ভানগড় কেল্লা নিয়ে আরেকটি গল্পও বিখ্যাত। কথিত আছে এক তান্ত্রিকের অভিশাপে এই দুর্গটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। রাজকন্যা রত্নাবতী এই দুর্গ ধ্বংসের কারণ। সেই তান্ত্রিক রাজকন্যার প্রেমে পড়েছিলেন। রাজকন্যাকে পাওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করেছিলেন তিনি। কিন্তু ষড়যন্ত্র প্রকাশ পেলে তান্ত্রিককে হত্যা করা হয়। এরপর এই তান্ত্রিকের অভিশাপে দুর্গটি ভগ্নাবশেষে পরিণত হয় এবং ভুতুড়ে স্থানে পরিণত হয়।