ঘুরতে যাচ্ছেন কিন্তু, জিনিসপত্র নেবেন কিসে? ব্যকপ্যাক, ট্রলি অথবা রুকস্যাক, সুবিধা হবে কোনটিতে?

ব্যাকপ্যাক

ছোট থেকে বড় রকমারি ব্যাকপ্যাক ভ্রমণের অঙ্গ হয়ে উঠতে পারে। তবে বেছে নেবেন প্রয়োজন অনুযায়ী। ১০, ২০, ৩০, ৩২, ৩৪ লিটার-সহ বিভিন্ন আকৃতির ব্যাকপ্যাক হয়। অনেকে বেড়ানোর সময় পিঠের ব্যাগে হালকা এবং জরুরি জিনিস রাখেন। সেটির জন্য ১০ লিটারই যথেষ্ট। আবার যদি বেড়ানোর পরিকল্পনা দু থেকে ৩ দিনের জন্য হয়, তখন ৩০ লিটারের ব্যাকপ্যাক সুবিধাজনক হবে।

কেন নেবেন?

ব্যাকপ্যাক পিঠে নেওয়া হয়। ব্যাকপ্যাকে জিনিসের ভার পড়ে দুই কাঁধে। ভ্রমণের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি মজবুত ব্যাকপ্যাক পাওয়া যায়। ব্যাকপ্যাক নিলে হাত দু’টি খালি থাকে। যে কোনও কাজ করতে বা অন্য জিনিস বইতে সুবিধা হয়।

রুকস্যাক

রুকস্যাককে বলা চলে ব্যাকপ্যাকের বড় সংস্করণ। জিনিসপত্র বেশি হলে ব্যাকপ্যাকের বদলে রুকস্যাক বেছে নিতে হবে। মূলত, ট্রেকিং, পর্বতারোহণ বা অভিযানে গেলে রুকস্যাক ব্যবহার করা হয়। ট্রেকিং করতে গেলে পিঠের ব্যাগেই ভরে ফেলতে হয় যাবতীয় জরুরি জিনিস। পানীয় জল থেকে পোশাক, আনুষঙ্গিক সমস্ত কিছুই। এত জিনিস ভরার জন্যই দরকার হয় বড় ব্যাগের। ৪০, ৫০, ৬০, ৭০ লিটারেরও রুকস্যাক হয়। জিনিসপত্র যত বাড়বে, ততই ব্যাগের আকারও বাড়াতে হবে।

রুকস্যাকে যে হেতু অনেকটা ভার বহন করতে হয়, তাই তা কতটা বিজ্ঞানসম্মত ভাবে তৈরি, দেখে নেওয়া প্রয়োজন। রুকস্যাক কেনার সময় খুব জরুরি তার ‘টরসো লেন্থ’ মেপে নেওয়া, যাতে তা কোমর থেকে নীচে নেমে না যায়। কোনও কোনও সংস্থা আবার ‘টরসো লেন্থ’ মেপে এবং শরীরের আকার অনুযায়ী রুকস্যাক তৈরি করিয়ে দেয়।

কেন নেবেন?

পাহাড়ি এলাকায় হেঁটে উঠতে গেলে ট্রলি ব্যাগ, স্যুটকেস কিন্তু সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পাহাড়ি এবড়ো-খেবড়ো পায়ে চলা রাস্তায় জিনিসপত্র নিয়ে উঠতে হলে রুকস্যাকই ভরসা।

ট্রেকিংয়ে না গেলও কি রুকস্যাক বেছে নেওয়া যায়?

ট্রেকিংয়ে না গেলেও কি রুকস্যাকের দরকার পড়তে পারে? অনেক সময় থাকার জায়গা থাকে পাহাড়ের মাথায়। এমন অনেক শৈলশহর রয়েছে, যেখানে হোটেলের দরজা পর্যন্ত গাড়ি যায় না। আবার চাইলে কুলিও মিলবে না। সে ক্ষেত্রে বড় ট্রলি বা অথবা স্যুটকেশ নিলে উঠতে অসুবিধা হবে। ১০-১২ দিনের ভ্রমণসূচি থাকলে জিনিস বেশি লাগবে। সে ক্ষেত্রে ব্যাকপ্যাকে না ধরলে, রুকস্যাক নেওয়াই ভাল।

ট্রলি

ভ্রমণের প্যাকিংয়ের জন্য ট্রলি স্যুটকেশ অথবা ব্যাগ বেশ জনপ্রিয়। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা এই যে, এতে চাকা লাগানো থাকে। ফলে ভার বইতে হয় না। হাতল ধরে টানলেই তা এগিয়ে চলে। ইদানীং অবশ্য রিমোটের সাহায্যে নিয়ন্ত্রিত ট্রলিও পাওয়া যায়। এগুলি হাতে ধরে টানতে হয় না। রিমোটের বোতামে চাপ দিলেই নিজে থেকেই এগিয়ে যায়।

স্যুটকেশ ছাড়াও বড় ব্যাগের আকারের ট্রলিও পাওয়া যায়। এর সুবিধা, অসুবিধা দুই-ই আছে। বেড়াতে যাওয়ার জন্য ট্রলি বাছাই করতে হলে দেখে নেওয়া দরকার তার আকার, চাকার মাপ, গুণগত মান, হাতল ইত্যাদি। বড় আকারের ট্রলিতে মালপত্র অনেক ধরলেও ট্রেনে বা বাসে ওঠার সময় তা তুলতে গিয়ে কোমরে চোট লাগতে পারে। আবার বড় ট্রলি ট্রেনের আসনের নীচে আঁটবে কি না, দেখে নেওয়া দরকার।

কেন নেবেন?

অনেকের কাঁধে, পিঠে সমস্যা থাকে। তাঁদের পক্ষে অনেকটা ভার বহন সম্ভব নয়। তাঁদের জন্য ট্রলি সুবিধাজনক। তবে একই সঙ্গে এর আকার-আয়তন, গুণগত মান দেখে নেওয়া দরকার। ট্রলিতে ঠেসে মালপত্র ভরার পর ওজনের চাপে চাকাটি ভেঙে গেলে তা নিয়ে বিপত্তির শেষ থাকবে না। তবে যদি পাহাড়ি এলাকায় ভ্রমণের পরিকল্পনা থাকে, দীর্ঘ পথ হেঁটে উঠতে হয়, তা হলে ট্রলি বাদ দিতে পারেন। না হলে একেবারে হালকা বা ছোট কোনও ট্রলি নিতে পারেন।

ট্রলি এবং ব্যাকপ্যাক

ট্রলি এবং ব্যাকপ্যাক, দু’টিই নিলে যে কোনও দীর্ঘ ভ্রমণে সুবিধা হবে। এতে ব্যাকপ্যাকের ওজনও যেমন খুব বেশি হবে না, আবার বড় ট্রলিও নিতে হবে না। যেখানে প্রয়োজন ট্রলি টেনে নেওয়া যাবে আবার দরকার হলে সেটি হাতে তুলেও নেওয়া যাবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here