ক্যান্সার এমন একটি ভয়ঙ্কর রোগ যা সারা বিশ্বে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এর কারণে বহু মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। তবে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করে এই মারাত্মক রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
সম্প্রতি, সেলিব্রিটি ডায়েটিশিয়ান নিকোল অ্যান্ড্রুজ তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ক্যানসার সম্পর্কিত একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন। তার ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) ভাইরাল হয়ে গেছে। তিনি জানিয়েছেন, প্রতিদিনের খাবারে দুটি বিপজ্জনক উপাদান রয়েছে যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলি কী।
নিকোল অ্যান্ড্রুজ বলেছেন, ক্যান্সারের মূল কারণ অ্যালকোহল এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস।
অ্যালকোহল গ্রহণ লিভারের ক্ষতি করার পাশাপাশি স্তন, মুখ, গলা, খাদ্যনালী এবং অন্ত্রের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
অ্যালকোহল শরীরে প্রবেশ করার পর এটি অ্যাসিট্যালডিহাইডে রূপান্তরিত হয়। এটি ডিএনএকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করে। সহজ কথায়, অ্যালকোহল একটি কার্সিনোজেন হিসেবে কাজ করে।
প্রক্রিয়াজাত মাংসও ক্যান্সারের কারণ হিসেবে বিবেচিত। হ্যাম, স্যালামি, বেকন এবং প্রক্রিয়াজাত সসেজ (যেমন ফ্রাঙ্কফার্টারস, চোরিজো) ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। এগুলি নাইট্রেট এবং এন-নাইট্রোসো যৌগের মতো ক্ষতিকারক রাসায়নিক ধারণ করে। এগুলি বিশেষ করে অন্ত্রের ক্যানসারের জন্য দায়ী।
তাছাড়া, উচ্চ তাপমাত্রায় এগুলি রান্না করার সময় পলিসাইক্লিক অ্যারোম্যাটিক হাইড্রোকার্বন এবং হেটেরোসাইক্লিক অ্যামাইনের মতো বিপজ্জনক যৌগ উৎপন্ন হয়। গরুর মাংসে থাকা হিম আয়রন হজমের সময় ক্ষতিকারক যৌগে রূপান্তরিত হয় এবং অন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
চিনি বিপজ্জনক, এটি সকলেরই জানা। তবে এটি সরাসরি ক্যানসারের কারণ নয়। চিনি ক্যানসার কোষ বাড়ায় না। তবুও, অতিরিক্ত চিনি খেলে শরীরে ক্যালোরি জমে ওজন বাড়তে পারে। অতিরিক্ত শরীরের চর্বি ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
নিকোল অ্যান্ড্রুজ বলেছেন, স্থূলতা অন্তত ১৩ ধরনের ক্যানসারের কারণ। শরীরে অতিরিক্ত চর্বি দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা এবং বিপাকীয় পরিবর্তন ঘটায়। এগুলি ক্যানসার কোষের বৃদ্ধির জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে।
সুষম খাদ্য ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন মাছ, ডিম, মুরগির মাংস এবং কম চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তাছাড়া, শাকসবজির পরিমাণ বাড়ানোর কথাও বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। সুষম খাদ্য মানে কিছু খাবার সম্পূর্ণ পরিত্যাগ করা নয়, বরং বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া।