“দিকে দিকে এই বার্তা রটি গেল ক্রমে,

মৈত্র মহাশয় যাবেন সাগর সংগমে

তীর্থস্নান লাগি’- গঙ্গাসাগর নিয়ে এই লেখনী লিখে গিয়েছেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। দেবতার গ্রাস কবিতার সেই গঙ্গাসাগরে প্রতিবছর মকর সংক্রান্তিতে ভিড় জমান বহু পুণ্যার্থী।

মকর সংক্রান্তির পূণ্যলগ্নে গঙ্গাসাগর হয়ে ওঠে এক মহামিলন মেলা। কেন এত লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় জমান গঙ্গাসাগরে তা জানেন? বাংলার এই তীর্থক্ষেত্রের কী এমন মাহাত্ম্য? চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক সবটা।

বলা হয় গঙ্গাসাগরে গিয়ে পতিতপাবণী গঙ্গের বুকে ডুব দিলে মুক্তি পাওয়া যায় সব পাপ থেকে। বর্তমানে গঙ্গাসাগর তীর্থের পথ অনেক সুগম হয়েছে। একসময় এই পথ ছিল বিপজ্জনক। প্রাচীনকালে গঙ্গাসাগর যাওয়ার পথে ছিল নৌকাডুবির ভয়, জলদস্যুর আতঙ্ক।

যুগ যুগ ধরে মকর সংক্রান্তিতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ এই সাগর তীর্থে আসেন। জ্যোতিষ মতে,সূর্য মকর সংক্রান্তিতে মকর রাশিতে প্রবেশ করে ।

বিশ্বাস করা হয়, যে এই তিথিতে গঙ্গাস্নান করলে ১০০টি অশ্বমেধ যজ্ঞ করার সমান পুণ্য লাভ হয়। তাই এদিন গঙ্গাসাগরে এত মানুষ সমবেত হন।

পুরাণে লিখিত  অনুসারে অযোধ্যার ইক্ষাকু বংশের রাজা সগর। তিনি একবার অশ্বমেধ যজ্ঞ করেছিলেন। অশ্বমেধের ঘোড়া চুরি করেছিলেন দেবরাজ ইন্দ্র। তারপর গঙ্গাসাগরে কপিল মুনির আশ্রমের কাছেই তিনি লুকিয়ে রাখেন ঘোড়াগুলিকে।

অশ্বমেধ যজ্ঞের নিয়ম অনুসারে সেই ঘোড়া খুঁজতে আসে সাগর রাজার ৬০ হাজার পুত্র। কপিল মুনির রোষের মুখে পড়েন তাঁরা। তাঁদের ভষ্ম করে দেন কপিল মুনি.

পুরাণ মতে, সগর রাজার মৃত ৬০ হাজার সন্তানকে জীবন ফিরিয়ে দিতে তাঁর নাতি ভগীরথ মর্ত্যলোকে গঙ্গাকে নিয়ে এসেছিলেন। তাই মকর সংক্রান্তিতে গঙ্গা এবং সাগরের সঙ্গমে স্নান করলে অসীম পুণ্যের কথা বর্ণিত হয়েছে পুরাণে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here