কৌশিক চক্রবর্তী
মঙ্গলবার ইডেন গার্ডেন্সের দু’টি স্ট্যান্ড ঝুলন গোস্বামী এবং কর্নেল এন জে নায়ারের নামে করার সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল। বঙ্গ ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থার পক্ষ থেকে নেওয়া এই পদক্ষেপ অবশ্যই প্রশংসনীয়। তবে, এর সঙ্গেই তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক এবং সেই বিতর্কে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে গিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস (রাজ) গঙ্গোপাধ্যায়।
২০১৭ সালে কিংবদন্তি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সভাপতি থাকাকালীন আইপিএল-এ কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম দিল্লি ক্যাপিটলসের ম্যাচে সেনাবাহিনীর চার শহীদের নামে ইডেন গার্ডেন্সের একটি ব্লকে স্ট্যান্ড করা হয়েছিল। যাঁদের নামে স্ট্যান্ডের নামকরণ করা হয়েছিল তাঁরা হলেন কর্নেল নীলকান্ত জয়চন্দ্র নায়ার, লেফটেন্যান্ট কর্নেল ধন সিং থাপা, হাবিলদার হ্যাংপ্যান দাদা এবং সুবেদার যোগিন্দর সিং। এই ঘোষণার সময়ে মাঠে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সচিব অভিষেক ডালমিয়া, যুগ্মসচিব সুবীর(বাবলু) গঙ্গোপাধ্যায় এবং সহ-সভাপতি সমর পাল। ম্যাচের পরের দিন একাধিক প্রথম শ্রেণীর পত্রিকায় সেই খবর প্রকাশিতও হয়।
প্রশ্ন উঠছে এখানেই, ৭ বছর আগে যেখানে এন জে নায়ারের নামে স্ট্যান্ডের ঘোষণা আগেই করে দিয়েছিল সিএবি সেখানে ৭ বছর পর শহিদ কর্নেলের নামে আবার কী ভাবে স্ট্যান্ডের নামকরণ করা হল। এই বিষয়ে বর্তমান সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের মতামত জানতে sportsnscreen যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে।
এই প্রতিবেদককে স্নেহাশিস বলেন, “ঘোষণা অনেক কিছুই হতে পারে। আমি বলতেই পারি চাঁদে যাব, চাঁদে কি পৌঁছেছি? এ সব একেবারেই বাজে কথা। যদি সাত বছর আগে নামকরণের ঘোষণা হয়ে থাকে তা হলে এতদিনে তা হয়নি কেন? ৭ বছর সময় লেগে গেল এক্সিকিউট করতে? আমরা সেপ্টেম্বরে আর্মির কাছে স্ট্যান্ডের নামকরণের আর্জি জানাই। এ বার যখন ঝুলনের নাম প্রস্তাব করি তখন ওরা কর্নেল নায়ারের নাম প্রস্তাব করে। এই হচ্ছে পুরো ঘটনা। বাকি যে যা বলছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। সাত বছর আগের যে কথা বলা হচ্ছে তার নথি কোথায়? আমরা সেপ্টেম্বরে চিঠি পাঠাই, একমাসের মধ্যে আর্মি তাদের সম্মতি জানিয়ে দেয়। সেখানে সাত বছর লেগে গেল! ৭ বছরের মধ্যে একাধিক বার সিএবির সভাপতি-সচিব বদল হয়েছে। তারা কেন সেই কাজকে বাস্তবের রূপ দিতে পারল না। যেখানে আমরা দুই মাসে পুরো বিষয়টা করেছি সেখানে ঘোষণার পর যদি সাত বছর লেগে যায় সেই কাজকে রূপদান করতে, তা হলে যাঁরা এর মাঝে ছিলেন তাঁদের কোনও যোগ্যতাই নেই!”
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে স্ট্যান্ডের নামকরণের সময়ে সিএবি-র সভাপতি যেমন সৌরভ ছিলেন তেমনই সচিব পদে ছিলেন অভিষেক ডালমিয়া। ২০২০ সালে অভিষেক সিএবির সভাপতি পদে দায়িত্ব নেন। দুই বছরের কিছু বেশি সময়ে তিনি সভাপতি থাকার পর ২০২২ সালে সভাপতি হন স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। সভাপিতর পদে আসার আগে অভিষেক সভাপতি থাকাকালীন সচিবের দায়িত্ব সামলেছেন স্নেহাশিস।