মহিলাদের বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সন্তান ধারনের ক্ষেত্রে নানা রকমের সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। কিছু কিছু সময় অতিরিক্ত বেশি বয়সে শরীরে ডিম্বাণু তৈরি হওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। তাই অনেকেই আজকাল আগে থেকেই ডিম্বাণু সংরক্ষণ করে রাখেন। তবে বেশির ভাগ মানুষ ভাবেন সব বাধ্যবাধকতাই হল শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য।

বিষয়টা কিন্তু এমন মোটেই নয়। বরং পুরুষদেরও বাবা হওয়ার ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট বয়স রয়েছে। তাঁর বেশি বয়স হলে, সমস্যায় পড়তে হয় পুরুষদেরও। নানা জটিলতা তৈরি হয় সঙ্গমের ক্ষেত্রেও।

ম্যাচুরিটাস জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষদেরও বাবা হওয়ার ক্ষেত্রে নানা সমস্যা তৈরি হয়। এমনকি শুক্রাণুর উৎপাদন কমে আসে, এবং পুরুষদের শুক্রাণুর গুণগত মান কমতে থাকে।

মহিলাদের ক্ষেত্রে মেনোপজ বা রজনিবৃত্তির পরে সন্তানধারণের সম্ভাবনা থাকে না। তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে বিষয়টি সেই রকম নয়। পুরুষদের শরীরে শুক্রাণু তৈরি কখনও বন্ধ হয় না। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুক্রাণুর জেনেটিক মিউটেশন হয়।

জেনেটিক মিউটেশন হলে শুক্রাণুর ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ফলে পুরুষদের বাবা হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক কমে যায়। আরও জানা গিয়েছে, ৪০ বছরের পরে পুরুষদের বাবা হওয়ার ক্ষমতা কমে যায়।

বাবা হলেও শুক্রাণুর গুণগত মান কমে যাওয়ার কারণে সন্তানের স্বাস্থ্যের উপরে তার খারাপ প্রভাব পড়ে। সঙ্গম সঙ্গীর গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস, প্রিক্ল্যাম্পসিয়া বা প্রি ম্যাচিউরড বেবি হতে পারে।

বাবার বয়স যদি বেশি হয়, তাহলে শিশুর স্নায়ুজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি হয়। জন্মের সময়ে শিশুর জন্মকালীন ওজন বা বার্থওয়েট স্বাভাবিকের চেয়ে কম হতে পারে। বাবার বয়স হলে সদ্যোজাতর হার্টের সমস্যা বা খিঁচুনির সমস্যাও হতে পারে।

তবে বাবা হওয়ার জন্য কোন বয়স উপযুক্ত। গবেষকদের মতে পুরুষদের শুক্রাণুর মান সবচেয়ে বেশি উৎকৃষ্ট থাকে ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। তাই এই সময়ের মধ্যে বাবা হওয়া সবচেয়ে ভাল। তবে আজকাল শরীর স্বাস্থ্য ভাল হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ৩২-৩৩ বছর অবধি বাবা হলে, কোনও সমস্যা হয় না। যদিও অনেকেই বেশি বয়সে বাবা হন। তবে সে ক্ষেত্রে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেওয়াই ভাল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here