হিন্দু ধর্মে একাদশী তিথিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভগবান বিষ্ণুর কাছে অত্যন্ত প্রিয় একটি দিন। মলমাস ছাড়া এক বছরে মোট ২৪টি একাদশীর উপবাস রয়েছে, যেখানে অধীক মাসে আরও দুটি একাদশী তিথি পড়ার কারণে এর সংখ্যা ২৬ টি হয়ে যায়। বিশ্বাস করা হয় যে একাদশী তিথিতে উপবাস করলে পাপ নাশ হয় এবং মোক্ষ লাভ হয়। এই শুভ উপলক্ষ্যে ভগবান বিষ্ণু ও মা লক্ষ্মীর আরাধনা করলে ঘর ধন-সম্পদে পরিপূর্ণ থাকে এবং সুখ-শান্তি বিরাজ করে।
হিন্দু বছরের ১৭ তম শুভ একাদশীকে বলা হয় উৎপন্ন একাদশী। প্রতি বছর মার্গশীর্ষ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথিতে এই একাদশীর উপবাস পালন করা হয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক, এই বার ২৫ নভেম্বর না ২৬ নভেম্বর এই পুণ্যদায়ী একাদশী, এবং এই দিনে কোন বিশেষ উপায়ে ভগবান বিষ্ণুকে প্রসন্ন করে আর্থিক সংকট থেকে মুক্তি লাভ সম্ভব।
সনাতন পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, মার্গশীর্ষ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথি এই বছরের ২৫ নভেম্বর সোমবার রাত ০১ টা ০১ মিনিট থেকে শুরু হচ্ছে, যা পরের দিন ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার ভোর ০৩ টে ৪৭ মিনিটে শেষ হবে। উপবাস ও উপাসনা পালনের উদয়তিথির নিয়মের উপর ভিত্তি করে, ২৬ নভেম্বর উৎপন্ন একাদশীর উপবাস পালনকে শুভ বলে মনে করা হচ্ছে। ২৭ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে দুপুর ১ টা ৩৩ মিনিট থেকে ০৩ টে ৪৬ মিনিটের মধ্যে এই একাদশীর উপবাস ভঙ্গ করা শুভ।
অর্থ সংকট থেকে উত্তরণের উপায়: উৎপন্ন একাদশীর দিন দেবী তুলসীর পুজোর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। আপনি যদি আর্থিক সংকটে ভুগে থাকেন তবে এই একাদশীতে দেবী তুলসীকে জল নিবেদন করে তার পুজো করলে উপকার পাওয়া যাবে। মা তুলসীর সামনে পাঁচটি প্রদীপ জ্বালান। ৭ বার প্রদক্ষিণ করে তাঁর ১০৮ টি নাম জপ করলে ভগবান বিষ্ণু প্রসন্ন হন এবং সমস্ত ধরনের আর্থিক সমস্যা দূর হয়।
সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধির উপায়: উৎপন্ন একাদশীর দিনটি ভগবান বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়, তাই এই দিনে তাঁর দিব্য রূপ শালিগ্রামের পুজো করার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। শালিগ্রামকে একটি পাত্রে রাখুন, গঙ্গাজল দিয়ে ধুয়ে নিন, একটি হলুদ চৌকিতে রাখুন এবং চন্দন লাগান। তারপর তুলসী পাতা ও নৈবেদ্য দিয়ে আরতি করুন। এতে ঘরে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে।
ভগবান গণেশের পুজো করার সময়ে সিঁদুর নিবেদন করুন। এতে দেবতার কৃপায় আপনায় অর্থলাভের সম্ভাবনা তো বাড়বেই তার পাশাপাশি গণপতির কৃপায় আপনি সুস্বাস্থ্যও পাবেন।