ভারতে বিভিন্ন সংস্কৃতি, রীতিনীতি, শিল্প, ধর্ম, ভাষার মানুষ রয়েছে। এই কারণেই আপনি এই স্থানের বিভিন্ন অংশের ঐতিহ্য একে অপরের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা দেখতে পাবেন। বিয়ের ক্ষেত্রেও তাই। দেশের প্রতিটি কোণে সম্পূর্ণ ভিন্ন ঐতিহ্য এবং আচার মেনে বিয়ে হয়। যাই হোক, বেশিরভাগ জায়গায় আমরা দম্পতিদের অগ্নিসাক্ষী করে বিয়ে করতে দেখি।

কিন্তু আপনি কি জানেন যে ভারতে এমন একটি জায়গা রয়েছে যেখানে মানুষ আগুনকে নয়, জলকে সাক্ষী হিসাবে বিবেচনা করে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে? আসুন আমরা আপনাকে একই জায়গা সম্পর্কে বলি।

ছত্তিশগড়ের বস্তারে আদিবাসী সমাজ বিয়ের সময় এই রীতি মেনে চলে। এখানকার আদিবাসী সমাজ বরাবরই প্রকৃতির পূজা করে এসেছে। বিয়েতে অপব্যয় ঠেকাতে তারা এটা করে। জানলে অবাক হবেন এই প্রথা আজ থেকে নয়, বহুদিন ধরে চলে আসছে।

ছত্তিশগড়ের ধুর্বা সম্প্রদায়ের কাছে জল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জল তাদের কাছে ঈশ্বরের মতো। সেজন্য শুধু বিয়েতেই নয়, সমস্ত শুভকাজে জলকে সাক্ষী রেখে আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা। ধুর্বা সমাজ মূলত বস্তারের বাসিন্দা। এই সমাজের প্রবীণ প্রজন্ম কাঙ্কের উপত্যকা জাতীয় উদ্যানের কাছে বসবাস করত। প্রতিটি শুভ কাজে কাঙ্কের নদীর জল ব্যবহার করতেন তাঁরা।

বস্তারে বসবাসকারী আদিবাসীরা প্রাচীনত্বে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী। তাই তারা প্রত্যেক শুভ কাজে অবশ্যই গাছ ও জলের পূজা করে। এখানে বিয়ের সময় শুধু পাত্র-পাত্রী নয়, পুরো গ্রামের মানুষ সাতপাকে ঘোরে। এখানকার নালা, পুকুর, নদী,শিমূল গাছ ও কূপের জল বিয়েতে ব্যবহার করা হয়, যাকে এখানকার মানুষেরা দেব জল বলে।

এই সমাজে বিয়ের সময় আর একটি অনন্য প্রথা অনুসরণ করা হয়। যেখানে সারা দেশে ভাই-বোনের বিয়েকে ছোট করে দেখা হয়, সেখানে এই আদিবাসী সমাজে শুধু ভাই-বোনেরই বিয়ে হয়। তবে একই বাবা-মায়ের সন্তানদের এখানে বিয়ে হয় না। তুতো ভাই-বোনের বিয়ে হতে পারে। কেউ তা করতে অস্বীকার করলে তাকে জরিমানা দিতে হয়। যৌতুকের লেনদেন এখানে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here