প্রয়াত ৭২ বছর বয়সে প্রয়াত সীতারাম ইয়েচুরি। দীর্ঘ ২৫ দিন ধরে যুদ্ধটা চলছিল, অবশেষে হার মানলেন বামেদের এই সৈনিক। গত ১৯ অগস্ট শ্বাসযন্ত্রে গুরুতর সংক্রমণ ধরা পড়ার পর সিপিএমের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে ভর্তি করানো হয়েছিল দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস)-এ। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
সিপিএমের সর্বভারতীয় সম্পাদকের প্রয়ানের খবর দেন সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য নীলোৎপল বসু। তিনি জানিয়েছেন, দুপুর ৩টে তিন মিনিটে প্রয়াত হন সীতারাম ইয়েচুরি। ২০২১ সালে ফুসফুসে সংক্রমণ হয় তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র আশিস ইয়েচুরি। শেষ পর্যন্ত মারা যান তিনি।
গত ৮ অগস্ট দিল্লিতে ইয়েচুরির চোখে ছানির অস্ত্রোপচার হয়েছিল। ওই দিনই প্রয়াত হন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। স্বভাবতই আসতে পারেননি। পরে ২২ আগস্ট নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বুদ্ধবাবুর স্মরণসভাতেও থাকতে পারেননি। তার দু’দিন আগে ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে তাঁকে ভর্তি হতে হয়েছিল এমসে। প্রথম থেকেই আইসিইউয়ে রাখা হয়েছিল তাঁকে।
তৎকালীন মাদ্রাজ বর্তমান চেন্নাইয়ে ১৯৫২ সালের ১২ অগস্ট জন্ম নেন সীতারাম ইয়েচুরি। ১৯৬৯ সালে দিল্লির প্রেসিডেন্ট এস্টেট স্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকেই সিবিএসই দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি। অর্থনীতিতে স্নাতক হন দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে। তার পর স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি হন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-
সেখানে পড়াকালীনই সিপিএমের সদস্যপদ গ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালে ভারতের ছাত্র ফেডারেশন (এসএফআই)-এর সর্বভারতীয় যুগ্ম সম্পাদক হন। ১৯৮৪ সালে এসএফআই-এর সর্বভারতীয় সভাপতি। ১৯৮৫ সালে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সাল থেকে পলিটব্যুরোর সদস্য। ২০১৫ সালে কোঝিকোড় পার্টি কংগ্রেসে তিনি সিপিএমের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। ২০০৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বাংলা থেকে নির্বাচিত হয়ে রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন ইয়েচুরি। সিপিএম সাধারণ সম্পাদকের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন তৃণমূলনেত্রী তথা বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।