আরজি কর কাণ্ডের জেরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। ইতিমধ্যেই গণইস্তফা দিয়েছেন সিনিয়র ডাক্তারেরা। তারমধ্যেই মঙ্গলবার এই মামলায় শিয়ালদহ আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। এই চার্জশিটে ধৃতের বিরুদ্ধে মোট ১১টি ‘প্রমাণ’ পেয়েছে তারা। সিবিআইয়ের সেই চার্জশিট এখন আনন্দবাজার অনলাইনের হেফাজতে।
সিবিআই চার্জশিটে লেখা হয়েছে, ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারই যে আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় জড়িত, তার বহু প্রমাণ হাতে রয়েছে। সংগৃহীত বয়ান, ভিডিয়ো এবং ফরেন্সিক বা সায়েন্টিফিক রিপোর্টের ভিত্তিতে ধৃতের বিরুদ্ধে মোট ১১টি প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। সিবিআই চার্জশিটে যে ১১টি প্রমাণ দিয়েছে, তা হল—
১। সিসিটিভি ফুটেজ থেকেই জানা গিয়েছে, গত ৮ অগস্ট রাতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চারতলায় গিয়েছিলেন ধৃত। সেটাই ছিল মূল ঘটনাস্থল।
২। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার যে ওই রাতে আরজি কর হাসপাতালেই ছিলেন, তাঁর মোবাইল ফোনের লোকেশন থেকেই তার প্রমাণ মিলেছে।
৩। ময়নাতদন্তের সময় মৃতার দেহ থেকে ধৃতের ডিএনএ মিলেছে।
৪। ধৃতের যে প্যান্ট এবং জুতো পুলিশ উদ্ধার করেছিল, তা থেকে মৃতার রক্তের দাগ মিলেছে।
৫। ঘটনাস্থল থেকে যে ছোট ছোট চুল পাওয়া গিয়েছিল, তা অভিযুক্তের চুলের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।
৬। ঘটনাস্থল থেকে যে ব্লুটুথ ইয়ারফোন উদ্ধার হয়েছিল, তা ধৃতের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া ফোনের সঙ্গেই যুক্ত ছিল। এখানে উল্লেখ করা জরুরি, ঘটনার রাতে ধৃতকে যখন ঘটনাস্থলের দিকে যেতে দেখা গিয়েছিল, তখন তাঁর গলায় ব্লুটুথ ইয়ারফোন জড়ানো ছিল। কিন্তু তিনি যখন ফিরছিলেন ঘটনাস্থল থেকে, তখন সেই ব্লুটুথ ইয়ারফোন তাঁর গলায় ছিল না।
৭। ধৃতের শরীর থেকে যে ক্ষতচিহ্ন মিলেছিল, দেখা গিয়েছে, ধৃতের মেডিক্যাল পরীক্ষার ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা আগে সেই ক্ষত তৈরি হয়েছিল। অর্থাৎ, হিসাব মতো ৮ অগস্ট থেকে ৯ অগস্টের মধ্যেই তৈরি হয়েছিল সেই ক্ষত। ঘটনাচক্রে, মহিলা চিকিৎসকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনাও ওই সময়েই ঘটেছিল।
৮। অভিযুক্তের শরীরে যে ক্ষতচিহ্ন মিলেছে, সেগুলি নির্যাতিতার প্রতিরোধের ফলেই তৈরি হয়েছিল।
৯। অভিযুক্তের মেডিক্যাল পরীক্ষা থেকে এ রকম কোনও প্রমাণ মেলেনি যে, তিনি সঙ্গমে অক্ষম।
১০। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া মৃতার অন্তর্বাস যে অবস্থায় মিলেছিল, তা থেকে বোঝা গিয়েছে যে, সেটি জোরজবরদস্তি খোলা হয়েছে।
১১। সিএফএসএল কলকাতার রিপোর্ট অনুযায়ী, মৃতা যে কুর্তি পরেছিলেন, কোমরের কাছে সেই কুর্তির দু’পাশটা ছিঁড়ে গিয়েছিল। তা টানাহেঁচড়ার কারণেই হয়েছে।