চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো সারা বিশ্বে বিখ্যাত।  এই জেলায় প্রতিমা দেখার জন্য ভিড় করেন বহু মানুষ। এখানে বিশাল বিশাল প্রতিমা হয়। কিন্তু কেন চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী প্রতিমাগুলির উচ্চতা কেন ২৪, ২৫ বা ২৬ ফুট হয়ে থাকে জানেন?

এই বিষয়ে পুজো উদ্যোক্তারা বিভিন্ন জন বিভিন্ন মত দিয়েছেন। চন্দননগর বড়বাজার জগদ্ধাত্রী পুজোর কমিটির সদস্য সৌমেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘ছোটবেলা থেকেই বড় আকারের জগদ্ধাত্রী প্রতিমা দেখে এসেছি। আমাদের মনে হয় যেহেতু দেবী গোটা জগৎকে ধারণ করেন তাই তাঁর আকার বড় করা হয়। চালচিত্র নিয়ে আমাদের প্রতিমার উচ্চতা প্রায় ২৪ থেকে ২৫ ফুট।’

লালবাগান জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কৌস্তুভ দত্ত বলেন, ‘আমাদের প্রতিমার উচ্চতা সাড়ে ২৫ ফুট। বড় প্রতিমার প্রতি সাধারণ মানুষের আকর্ষণ অনেক বেশি থাকে।’ জ্যোতির মোড় তেমাথা শিব মন্দির জগদ্ধাত্রী পুজো সমিতির সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু দে জানান, প্রতিমার এই উচ্চতা চন্দননগরের ঐতিহ্য। বহু বছর ধরেই এই ধরনের বড় আকারের প্রতিমাই হয়ে আসছে জগদ্ধাত্রী পুজোয়।’

অবসরপ্রাপ্ত ইতিহাসের অধ্যাপক বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অতীতে প্রায় সব বাড়়িতেই জগদ্ধাত্রী পুজোর চল ছিল চন্দননগরে। কারণ মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র তাঁর দেওয়ান দাতারাম সুরকে বলেছিলেন বাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজো করতে। তারপর তার দেখাদেখি বহু বিত্তশালী তাঁদের বাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন। পরে ব্যবসায়ীরা এই পুজোর দায়িত্ব নেন। তাঁদের নিজেদের মধ্যেই একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছিল যে কার প্রতিমা কত বড় হবে। পরে ওই ব্যবসায়ীদের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়াতে জগদ্ধাত্রীপুজো বারোয়ারি পুজোর রূপ নেয়। সেই সময় প্রতিমার উচ্চতা আরও বড় হতে থাকে। চন্দননগর ও ভদ্রেশ্বরে প্রতি বছর ৩০০টির বেশি জগদ্ধাত্রী পুজো হয়।

শোভাযাত্রায় যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সেই জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি প্রতিমার সর্বোচ্চ উচ্চতা ২৮ ফুট বেঁধে দিয়েছে। এই কমিটির অধীনে রয়েছে ১৭৭টি পুজো।

তথ্যসূত্র: এই সময় অনলাইন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here