কলকাতার গায়ে যেন প্রাচীনত্বের গন্ধ মাখানো রয়েছে। এই যে তিলোত্তমার বুকে কত গলি, তাদের কতই না নাম সে’সবের নেপথ্যে ছড়িয়ে রয়েছে নানা গল্প। তার কিছু সত্য, কিছু বা গল্প। আবার কিছু হয়তো লোকমুখে প্রচারিত হতে হতে তৈরি হয়ে যাওয়া লোককথা। কলকাতার একটি অতি পরিচিত জায়গা বৈঠকখানা বাজার। কীভাবে হল এর নামকরণ তাই আজকে আমরা জানব।
পুরনো কলকাতার মানচিত্র খুললে দেখা যায় বৈঠকখানা রোড নামে একটি রাস্তা ছিলই। সেই রাস্তার বিস্তৃতি ছিল লালবাজার থেকে সোজা শিয়ালদহ পর্যন্ত। সেই রোডে কাছে বসত একটি বাজার। ফলে হতে পারে বৈঠকখানা রোড সঙ্গলগ্ন বাজার বলেই এমন নামকরণ। কিন্তু কারও না কারও বৈঠকখানা তো নিশ্চয় রাস্তা বা বাজারের সঙ্গে জড়িত ছিল, সেটা কার বৈঠকখানা?
এই গল্প শুনতে হলে পিছিয়ে যেতে হবে অনেকটা। সেই কবে কলকাতায় এসে বসবাস শুরু করেছিলেন তিনি। তাঁর বৈঠকখানা থেকেই আসলে বৈঠকখানা বাজারের উৎপত্তি। বাণিজ্য করতেই কলকাতা, গোবিন্দপুর ও সুতানুটি এই তিনটি গ্রামকে বেছে নিয়েছিলেন চার্ণক। তৈরি করেছিলেন নিজের কুঠি। কিন্তু ব্যবসা বাণিজ্য করতে গেলে তো স্থানীয় মানুষজনদের সঙ্গে আলাপ পরিচয় জমানো দরকার। আর ঠিক সেটাই করলেন তিনি। এক বটতলায় সকলের সঙ্গে বসাতেন আড্ডা। চলত জিনিস কেনাবেচাও। পরে যখন সুতানুটি কলকাতা গোবিন্দপুর গ্রাম কিনে নিলেন চার্নক, তখনও নাকি এই বটগাছের তলাতেই বসত তাঁর কাউন্সিল। সেই থেকে বটতলা পরিচিত হয় বৈঠকখানা নামে। এইভাবে কলকাতার বুকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বৈঠকখানা বাজার।