দেখতে দেখতে ভালই ঠান্ডা পড়ে গিয়েছে শহরে। এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে আরেকটি ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা। দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে দানা বেঁধেছে সেই আতঙ্কের। যার নাম রাখা হয় ‘ফেনজল’। শনিবার বিকেলেই তামিলনাড়ুর উপকূলে তার ‘ল্যান্ডফলের’ সম্ভাবনা। পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে এর সরাসরি প্রভাব না পড়লেও পরোক্ষে বাংলার শীতের পথে ‘কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘ফেনজল’। শনিবার সকাল থেকে কলকাতায় আকাশ মেঘলা। কোথাও কোথাও দু’-এক পশলা বৃষ্টিও হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টি হয়েছে শহরতলিতেও। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের মোট ১১টি জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

যদিও এই অসময়ে খুব বেশি বৃষ্টি হবে না রাজ্যের কোথাও, আশ্বস্ত করেছেন আবহবিদেরা। তাঁদের মতে, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতির কারণে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঠান্ডা হাওয়া রাজ্যে ঢুকতে বাধা পাচ্ছে। উল্টে সাগরের দিক থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাস ঢুকছে। এর ফলে কোথাও কোথাও সামান্য বৃষ্টি হতে পারে। শনিবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান এবং নদিয়ায়। প্রতি ক্ষেত্রেই বিক্ষিপ্ত ভাবে দু’-একটি জায়গায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, জানিয়েছে হাওয়া অফিস। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে রবিবারও।

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলায় তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছে। শনিবার সকালে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় পাঁচ ডিগ্রি বেশি। তবে সকাল থেকে ঠান্ডা হাওয়া বইছে দক্ষিণবঙ্গের অনেক জেলায়। ফলে কিছুটা ঠান্ডা অনুভূত হয়েছে। এখনই পারদপতনের সম্ভাবনা কম, জানাচ্ছে আলিপুর।

হাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবারের পর থেকে কোনও জেলায় আর বৃষ্টির সম্ভাবনা না থাকলেও আগামী পাঁচ দিন উত্তর বা দক্ষিণবঙ্গে রাতের তাপমাত্রায় বড়সড় কোনও পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। অর্থাৎ, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকবে তাপমাত্রা।

মৌসম ভবনের তথ্য অনুযায়ী, পুদুচেরি থেকে ১৫০ কিলোমিটার পূর্বে, চেন্নাই থেকে ১৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়। বিকেলে তামিলনাড়ু-পুদুচেরি উপকূলে কারইকাল এবং মহাবলীপুরমের মধ্যে দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করবে ঘূর্ণিঝড়, জানিয়েছে মৌসম ভবন। এই সময়ে তার গতি থাকবে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে ‘ফেনজলের’ বেগ। এর ফলে সোমবার পর্যন্ত তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং কর্নাটকের বেশ কিছু এলাকায় টানা ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ইতিমধ্যে সেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে চেন্নাই বিমানবন্দর শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here