ভগবান বিষ্ণুকে শিলা রূপে পূজা করা হয়। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, শঙ্খচূড় নামক এক অসুরের স্ত্রী বৃন্দা স্বামীর সঙ্গে অত্যন্ত সুখী ছিলেন। তাঁর সতীত্ব ভঙ্গ না করে শঙ্খচূড়কে হারানো অসম্ভব ছিল। শ্রী হরি ছলনা করে রূপ পরিবর্তন করে বৃন্দার সতীত্ব ভঙ্গ করেছিলেন। তারপর ভগবান শিব শঙ্খচূড়কে বধ করেন। যখন বৃন্দা জানতে পারলেন যে ভগবান বিষ্ণু তার সতীত্ব হরণ করেছেন, তখন বৃন্দা শ্রী হরিকে একটি শিলা রূপে থাকার জন্য অভিশাপ দেন। অভিশাপের কারণে শ্রীহরি একটি শিলায় রূপান্তরিত হন। সেই থেকে শ্রী হরিও শিলারূপে বসবাস করেন। এগুলিকে শালগ্রাম বলে। বৃন্দা পরের জন্মে তুলসী রূপে জন্মগ্রহণ করেন। ভগবান বিষ্ণু বৃন্দাকে আশীর্বাদ করেছিলেন যে তুলসী পাতা ছাড়া তাঁর পূজা কখনওই সম্পূর্ণ হবে না।
যেভাবে শিবলিঙ্গকে শিবের দেবরূপে পূজা করা হয়। একইভাবে শালগ্রামকে শ্রী হরির দেব রূপে পূজা করা হয়। শালগ্রাম একটি গোলাকার কালো রঙের পাথর। এই পাথরটি নেপালের গণ্ডকী নদীর তীরে পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি ছিদ্র রয়েছে, পাথরের ভিতরে রয়েছে শঙ্খ, চক্র, গদা, পদ্যের মতো মূর্তি। কিছু শালগ্রাম পাথরে সাদা ডোরা আছে। এই পাথরটিকে ভগবান বিষ্ণুর রূপ বলে মনে করা হয়। শালগ্রাম শিলা যত কালো হবে, এর আকার যত বেশি হবে, তত ভাল হবে, তত বেশি কার্যকর হবে।
সতী বৃন্দার অভিশাপে ভগবান বিষ্ণু শালগ্রামের রূপ লাভ করেন। স্কন্দপুরাণের কার্তিক মাহাত্মতে ভগবান শালগ্রামের প্রশংসা করা হয়েছে। কথিত আছে, এর দর্শনে সকল তীর্থের ফল লাভ হয়। প্রতি বছর কার্তিক মাসের দ্বাদশীতে নারীরা প্রতীক হিসেবে তুলসী ও শালিগ্রামের বিয়ে দেন। তার পরই হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা বিবাহ ইত্যাদি শুভ কাজ শুরু করে।