গীতাকে সনাতন ধর্মে একটি পবিত্র গ্রন্থ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের প্রান্তরে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে যে জ্ঞান দান করেছিলেন তাই গীতা নামে পরিচিত। এর মাধ্যমে মাধব পার্থর কাছে জীবনের সারমর্ম তুলে ধরেছিলেন। বিশ্বাস করা হয় যে গীতার কিছু শ্লোক মেনে চললে জীবনে প্রচুর সাফল্য পাওয়া যায়।
১. কর্মণ্যেবধিকারস্তে মা ফলেষু কদচন। মা কর্মফলহেতুর্ভূর্মা তে সংস্থ্বকর্মাণী
গীতায় বলা হয়েছে, ফল কামনা করে কর্ম করলে কর্মের দিকে কম ও ফলের দিকেই বেশি মনোযোগ থাকবে। এ জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, কর্ম মানুষের হাতে, ফল নিয়ে চিন্তা কর না। শুধু কাজ করে যাও। ফলের আশা করো না।
২. ক্রোধদ্ভবতি সম্মোহ: স্মৃতিভ্রংশদ্বুদ্ধিনাশো বুদ্ধিনাশতপ্রাণস্যতি।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, রাগ বুদ্ধিকে ধ্বংস করে। একজন মূর্খ ব্যক্তি নিজেকে ধ্বংস করে। এমতাবস্থায় যে কোনও কাজের সফলতার জন্য ক্রোধ ত্যাগ করা আবশ্যক।
৩. অজ্ঞানশ্রাদ্ধধনাশ স্কুস্যাত্মা বিনশ্যতি। নয়ম লোকোস্তি ন পর ন সুখম্ সংশয়ত্মনঃ।
যে ব্যক্তি সন্দেহ পোষণ করে, সে কখনও সুখ শান্তি পায় না। এভাবে সে নিজেকে ধ্বংস করে। ইহকাল বা পরকালে সুখ নেই। তাই যে কোনও কাজে সফলতা পেতে হলে সন্দেহমুক্ত হয়ে কাজ করুন।
৪. সংগতসঞ্জয়তে কামঃ কামত্ক্রোধো বিজয়তে
বিষয় বস্তুর সঙ্গে সংযুক্তিও ব্যর্থতার কারণ হয়। যদি নিজের থেকে আসক্তি দূর না করেন, তবে জিনিসের প্রতি আসক্তি থেকে একটি ইচ্ছা জাগবে, যদি তা পূরণ না হয় তবে ক্রোধ থাকবে। এই বিষয়গুলি সফলতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
৫. হতো বৈ প্রপয়সি স্বর্গম, জিত্বা ব ভোক্ষ্যসে মহিমা। তস্মাৎ উত্তিষ্ঠা কৌন্তেয়া যুদ্ধয়া কৃতনিশ্চয়
সফল হতে হলে ভয় দূর করতে হবে। গীতার এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, অর্জুন যখন কৌরবদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাননি, তখন শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে বলেছিলেন, তুমি নির্ভয়ে যুদ্ধ কর। নিহত হলে স্বর্গ পাবে আর জিতলে পৃথিবী শাসন করবে। তাই যে কোনও কাজে সফলতা পেতে হলে মন থেকে ভয় দূর করতে হবে।