আরজি কর কাণ্ড নিয়ে উত্তাল রাজ্য। হাসপাতালে অন ডিউটি চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনার তদন্তে নেমেছে সিবিআই। তারপর থেকেই তাঁদের হাতে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। সূত্রের খবর, তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুন মোটেই কোনও আকস্মিক ঘটনা নয়। দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছে অভয়াকে। আর এর নেপথ্যে কারণ ছিল সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে নিহত চিকিৎসকদের গত প্রায় এক বছরের বিবাদ ও দ্বন্দ্ব!

বর্তমান পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুসারে, হাসপাতালের একাধিক অনিয়ম ও অন্য়ায়ের প্রতিবাদ করেই প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের শত্রু’তে পরিণত হয়েছিলেন ওই তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়া। সেই জন্যই এমন নৃশংস হত্যা।

বর্তমান পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুসারে, আর জি কর হাসপাতালে রোগীদের বিনামূল্যে যে ওষুধ দেওয়া হত, তা ছিল অত্যন্ত নিম্নমানের। এ নিয়ে বেশ কিছু সিনিয়র চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ করেন ওই তরুণী। এদিকে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই সিনিয়র চিকিৎসকরা সকলেই ছিলেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ। তারাই সন্দীপকে জানান এক তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়া যে নিম্নমানের ওষুধের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। এছাড়াও, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের পঠনপাঠন নিয়েও একাধিক অভিযোগ তুলেছিলেন নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসক। তাঁর বক্তব্য ছিল, মেধাবী চিকিৎসক পড়ুয়াদের গবেষণাপত্র সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ পড়ুয়া ও চিকিৎসকদের দিয়ে দিতে বাধ্য করা হয়। কলেজে ঠিক মতো ক্লাস হয় না। নিহত তরুণীর গবেষণাপত্রও সন্দীপ ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তিকে দিয়ে দেওয়ার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল।

এইসব কারণ ফাঁস হয়ে গেলে বিপদে পড়তেন আরজিকর হাসপাতালের অধ্যক্ষ্য। সেই জন্যই তরুণীর মুখ বন্ধ রাখতে মরিয়া হয়ে ওঠেন সন্দীপ। গ্রেফতারির পর সিবিআই আধিকারিকরা এ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করলে প্রথমে এড়িয়ে যান। পরে নথি থেকে প্রমাণ দেখালে সন্দীপ ঘোষ পুলিশি জেরার মুখে ভেঙে পড়েন।

সূত্রের দাবি, প্রাথমিকভাবে ওই তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়াকে নাকি ‘বোঝানো’ হয়েছিল, যাতে তিনি এইসব বিষয় নিয়ে খুব বেশি মাথা না ঘামান। কিন্তু, গোয়েন্দাদের হাতে আসা তথ্য বলছে, আসলে ওই তরুণীকে মুখ বন্ধ রাখার জন্য লাগাতার ভয় দেখানো হচ্ছিল। কিন্তু মাথা নত করতে রাজি ছিলেন না নিগৃহীতা। সেই কারণেই তাঁকে খুনের ছক কষা হয় বলে মনে করছেন সিবিআই গোয়েন্দারা।

তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, ওই তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়াকে কোথায় এবং কীভাবে খুন করা হবে, তার ছক সন্দীপ ঘোষ ছাড়াও জানতেন আরও চারজন চিকিৎসক!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here