যে কোনও দেবতার উদ্দেশ্যে নিবেদিত উপাচারে বাঙালি রীতিতে খিচুড়ি দেওয়া হয়। আবার শ্যামা পূজার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপকরণ হল সুরা। মদ নিবেদিত হয় দেবীর উদ্দেশ্যে। কিন্তু তা হলেও দেবীর আরাধনায় কিন্তু একমাত্র নৈবেদ্য এই কারণবারি নয়। অথচ ভারতের বুকেই এমন এক মন্দির আগে যেখানে আরাধ্য দেবতার উদ্দেশ্যে প্রতিদিনই নিবেদিত হয় মদ।
মন্দিরটির অবস্থান মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতে। স্থানীয়দের কাছে এই মন্দিরের পরিচয় হুইস্কি মন্দির নামে। আসলে এই মন্দিরে নিয়মিত পূজিত হন কালভৈরব। কালভৈরবের মন্দির নাম তো অতীত, উজ্জয়িনীতে গিয়ে যাকে জিজ্ঞাসা করবেন হুইস্কি মন্দিরের নাম সেই দেখিয়ে দেবে। এই মন্দিরের এমন অদ্ভুত নামকরণের কারণ এখানে ভোগপ্রসাদ হিসাবে অন্ন বা বাতাসা নয়, প্রধানত নিবেদিত হয় হুইস্কি। কখনও কখনও রাম বা ওয়াইনেও কাজ চলে যায়। তাই মন্দিরে ঢুকতেই চোখে পড়বে সার দেওয়া মদের দোকান।
এই মন্দিরের নির্মাতার সঠিক তথ্য সম্পর্কে ইতিহাস নীরব। তবে যতটুকু অনুমান করা যায় তার থেকে মনে করা হয় কালভৈরবের মূল মন্দির হাজার বছর আগে নির্মাণ করিয়েছিলেন রাজা ভদ্রসেন। প্রাচীন স্কন্দ পুরাণেও এই মন্দিরে আরাধনার উল্লেখ রয়েছে। সেই মন্দিরটি কালের নিয়মে ধ্বংস হয়েছে। পরে ওই ধ্বংসাবশেষের উপরেই গড়ে ওঠে নতুন মন্দির। তান্ত্রিকরা একসময় কালভৈরবের পূজো করতেন মদ, মাংস, মাছ, মুদ্রা ও মৈথুন দিয়ে।
এই মন্দিরে মারাঠা স্থাপত্যেক ছাপ রয়েছে। মারাঠা জেনারেল মহাদোজি শিণ্ডে তাঁর পাগড়ি উৎসর্গ করেছিলেন দেবতাকে। দেবতাকে উৎসর্গীকৃৎ মদের বোতল প্রসাদ হিসাবে পান ভক্তরা।