মন্দিরে যায় ঈশ্বরের আশীর্বাদ পেতে। কিন্তু কখনও এমন মন্দিরের কথা শুনেছেন যাকে অভিশপ্ত বলে মনে করা হয়। হ্যাঁ, এমনই একটি মন্দির রয়েছে মধ্যপ্রদেশে। মা দুর্গার এমনই এক অভিশপ্ত মন্দিরের কথা বলা হয় মধ্যপ্রদেশের দেওয়াসে। বলা হয়, মানুষ এখানে আসতে ভয় পায়। মা দুর্গার এই মন্দিরটিকে অভিশপ্ত স্থান বলে মনে করা হয়। এই মন্দিরে সেনাপতির আত্মহত্যার কারণে এখানে পূজা বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকেই মন্দিরটিকে অভিশপ্ত মনে করা হয়।
মধ্যপ্রদেশের দেওয়াসে অবস্থিত মা দুর্গার এই মন্দিরটি বহু বছর ধরে অভিশপ্ত বলে বিশ্বাস করা হয়। এখানে এসে ভক্তরা কেউ মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করে না। মানুষ মাথা নত করে এখান থেকে চলে যায়।
মন্দির সম্পর্কে মনে করা হয় যে এই মন্দিরটি দেওয়াসের রাজা নির্মাণ করেছিলেন। মন্দিরের নির্মাণকার্য শেষ হতে না হতেই রাজপরিবারে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে থাকে। এতে রাজপরিবারের বহু লোকের সঙ্গে রাজার কন্যাও জড়িত ছিলেন।
কথিত আছে, রাজার কন্যা একবার সেনাপতির প্রেমে পড়েছিলেন। কিন্তু রাজা এই প্রেম মেনে নিতে পারেননি। তাই দু’জনকে আলাদা করতে রাজা নিজের মেয়েকে কারারুদ্ধ করেন। কিন্তু রাজকন্যা এই বিরহ সহ্য করতে পারেননি। কারাগারেই মৃত্যু হয় তাঁর। এর পর রাজাও কন্যার শোকে পাথর হয়ে যান।
রাজকন্যার মৃত্যুর শোক সেনাপতিকেও নাড়া দিয়েছিল। তারপর সেনাপতি নিজের জীবন শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন এবং দুর্গার এই মন্দিরে আত্মহত্যা করেন। পুরোহিত আত্মহত্যার কথা জানতে পেরে রাজাকে জানান। সেনাপতির আত্মহত্যার কারণে মন্দিরটিকে অপবিত্র মনে করে এখানে পূজার অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই থেকে দেবী দুর্গার এই মন্দিরকে অভিশপ্ত মনে করা হয়।
এই ঘটনার পর মা দুর্গার মূর্তি এখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় উজ্জয়নের গণেশ মন্দিরে। পাশাপাশি দেওয়াসে অবস্থিত দেবী দুর্গার মন্দিরে তালা লাগানো হয়। বহু মানুষ এই মন্দির ভাঙার চেষ্টাও করেছিল, কিন্তু সফল হতে পারেনি। যদিও এই মন্দিরের সঙ্গে মানুষের বিশ্বাসও জড়িত। সন্ধ্যার পর মানুষ এই মন্দিরে যেতে ভয় পায়। স্থানীয় লোকজনের মতে, এমন কিছু ঘটনা এখানে ঘটেছে, যার কারণে মানুষ সূর্যাস্তের পর এখানে যেতে ভয় পায়।
স্থানীয় লোকজনের মতে, দেবী দুর্গার ভোগের জন্য এই মন্দিরে বলি দেওয়া হয়। একইসঙ্গে বলা হয়, যারা এখানে ভুল উদ্দেশ্য নিয়ে আসে তাদের সব সময়ই কষ্ট হয়। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে এই জায়গাটিকে ভুতুড়ে মনে হয়। তবে এই মন্দিরে কারও উপস্থিতির কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এগুলো স্থানীয় লোকজনের কথা মাত্র। দেওয়াস মধ্যপ্রদেশের মালওয়া অঞ্চলের একটি শহর। এই মন্দির ছাড়াও এখানে আরও অনেক বিখ্যাত মন্দির রয়েছে, যেখানে মানুষ দর্শনের জন্য আসতে পছন্দ করে।