গতকাল আরজি করে কর্মরত তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর প্রতিবাদে সামিল হন বহু সরকারি হাসপাতালের কর্মরত নার্স ও চিকিৎসকেরা। তরুণীকে ধর্ষণ করে খুন করেছেন ওই যুবক সঞ্জয় রায়। কিন্তু কে এই সঞ্জয়? তাঁর সঙ্গে কী সম্পর্ক রয়েছে হাসপাতালের। যার জেরে তিনি সব সময়েই ঢুকে পড়তে পারতেন।
এই নানা ধরনের প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে পরিবার সূত্রে তাঁর মা জানিয়েছেন, ছেলে এমন কাজ করেছে, তা বিশ্বাসই করতে পারছেন না । আরজি করের ঘটনায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের মা। অভিযুক্তের মায়ের কথায়, “ছেলে এই ঘটনা ঘটাতে পারে না।” তবে ছেলের একাধিক বিবাহের কথা তাঁর কানে এসেছিল বলে জানিয়েছেন বৃদ্ধা। কিন্তু সঞ্জয়ের স্ত্রী ক্যান্সারে মারা গিয়েছেন বহুদিন আগেই। এরপর আর কাকে বিয়ে করেছেন সেই বিষয় নিয়ে কিছুই জানেন না বৃদ্ধা। তবে তিনি এও জানিয়েছেন যে, পাড়াপ্রতিবেশিদের কাছ থেকে শুনেছেন ছেলের একাধিক বিবাহ করেছে। একই সঙ্গে তাঁকে বিলাপের সুরে বলতে শোনা যায়, “ছেলেকে জন্ম দিয়েই বিপদে পড়েছি।” ছেলে শেষ কবে বাড়িতে এসেছিলেন, তা-ও সঠিক ভাবে জানেন না বলে দাবি অভিযুক্তের মায়ের।
দক্ষিণ কলকাতার একটি গলিতে ওই যুবকের বাড়ি। পাশের ঘরের ওই পরিবারের এক সদস্যাকে জিজ্ঞাসা করা হয় অভিযুক্ত যুবক সম্পর্কে। সেই মহিলা বললেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে খুব একটা যোগাযোগ নেই।’’ এক চালার একটি ঘরে থাকেন সঞ্জয়ের মা। তবে ছেলে কবে বাড়িতে আসেন সেই বিষয়ে কিছুই বলতে পারেননি। ঘরের এক দিকে রাখা দু’টি প্লাস্টিকের চেয়ার। বিছানার এক পাশে একটির উপর আর একটি টুল রাখা। ছেলের কথা বলতে বলতেই উঠল তাঁর স্বামীর কথা। আলমারি খুলে লালপাড়-সাদা শাড়ি বার করে ফেললেন। দেখালেন, তার ভিতর রাখা তাঁর স্বামীর ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং একটি মেয়ের স্কুলের আই কার্ড। বার বার বলে চলেছেন, ‘‘ছেলে এটা কী ভাবে করতে পারে? ও তো বিয়ে করেছিল। ওর স্ত্রী তো ক্যানসারে মারা যায়। রোগ লুকিয়ে বিয়ে দিয়েছিল।’’
কথায় কথায় জানালেন, এক বোনকে নাচ শিখিয়েছেন এবং এক বোনকে এনসিসির ট্রেনিং নিতে ভর্তি করেছিলেন। ছেলের কথা বলতে গিয়ে বললেন, ‘‘ও কিছু দিন বক্সিংও শিখেছে।’’ অভিযুক্তের দুই বোন পুলিশে কর্মরত বলে স্থানীয়েরা জানান। তবে ধৃত যুবকের অতীত অপরাধের কোনও ‘রেকর্ড’ রয়েছে কি না, তা জানা যায়নি। পুরো বিষয় নিয়ে এখনও তদন্ত করে চলেছেন পুলিশ কর্তারা।