দীপাবলির আগের রাতে পালিত হয় ভূত চতুর্দশী। পশ্চিমী হলউইনের সঙ্গে বাংলার ভূত চতুর্দশী যেন গঙ্গাসাগরে হারিয়ে যাওয়া দুই-ভাই। এই রাত যেন তেঁনাদেরই রাত। পান থেকে চুনটি খসলেই একে একে ঘাঁড় মটকাতে চলে আসবেন ব্রহ্মদৈত্য, স্কন্ধকাটা, মেছো, মামদোরা। বাংলায় ভূত চতুর্দশী পালিত হয় মহা ধূমধামে। এর নেপথ্যে থাকা পৌরাণিক কাহিনীটি অনেকেই জানেন না।

‘অতি দর্পে হতা লঙ্কা, অতি মানে চ কৌরবা, অতি দানে বলির্বদ্ধ, সর্বমত্যন্তগর্হিতম’ – অতিপরিচিত এই সংস্কৃত শ্লোকটির বঙ্গানুবাদ করলে দাঁড়ায় অতিদর্পে ধ্বংস হয়েছিল লঙ্কা, অতিরিক্ত অহঙ্কারে পতন হয়েছিল কৌরবদের, অতি দানে নিঃস্ব হয়েছিলেন বলি রাজা, কোনও কিছুই অতিরিক্ত ভাল না। সেই বলি রাজাই রয়েছেন এই কাহিনীর মূলে। দৈত্যরাজ বলি দখল করেছিলেন স্বর্গ-মর্ত-পাতাল। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ মানুষ ও দেবতারা শরণাপন্ন হন বিষ্ণুর।

বলির অত্যাচার থেকে জগৎ সংসারকে মুক্তি দিতে বিষ্ণু এবার অবতার নিলেন বামনের। দৈত্যরাজ ছিলেন অত্যন্ত দানী। তাই বামন অবতার নিয়ে বিষ্ণু বলির কাছে গিয়ে তিন পাদ জমি চাইলেন। প্রথম দু’পাদ ছিল স্বর্গ-মর্ত, নাভী থেকে বের হওয়া তৃতীয় পা’টি রাখলেন বলির শিরে। দানশীল বলি চিনতে পেরেছিলেন বিষ্ণুকে। তারপরেও প্রার্থনা রক্ষার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন তিনি। প্রসন্ন বিষ্ণু তাঁকে বর দেন যে বলি পৃথিবীতে পুজো পাবেন। শোনা যায়, বিষ্ণুর আশীর্বাদধন্য বলি পৃথিবীতে দীপাবলিতেই আসেন পুজো নিতে। সঙ্গে পাতাল থেকে উঠে আসেন ভূত, প্রেতেরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here