পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন তুলসী গৌড়া। গাছের নামেই তাঁর নামকরণ, আর সেই গাছের প্রতি ছোট থেকেই ছিল তুলসী গৌড়ার টান। মঙ্গলবার সকালে আসে তাঁর মৃত্যুর শোকসংবাদ। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। জানা গিয়েছে কর্ণাটকের দেবনাগেরের হোন্নালি গ্রামে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
গাছের প্রতি তাঁর ভালোবাসার জেরে অনেকেই তাঁকে ‘বৃক্ষমাতা’ সম্বোধন করতেন। ১২ বছর বয়স থেকেই গাছ আর জঙ্গ তাঁকে আলাদা করে আকর্ষণ করত। দক্ষিণ ভারতের হালাক্কি সম্প্রদায়ের এই কন্যা ধীরে ধীরে সবুজের বিস্তার আরও বাড়িয়ে দিতে তৎপর হন। ১৯৪৪ সালে নারায়ণা হোন্নালি ও নীলী হোন্নালির পরিবারে জন্মানো ওই কন্যার নাম পবিত্র তুলসী গাছের নামে নামকরণ করা হয়। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি সবুজের প্রতিই নিজের সমস্ত ভালবাসা উজাড় করে দিয়েছেন। রিপোর্ট বলছে, ৬০ বছরে তিনি ৩০ হাজারের বেশি গাছ লাগিয়েছেন। তিনি কর্ণাটকের বনদফতরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন।
গাছ সম্পর্কে তাঁর ধারণা অনেককে অবাক করেছে। বিশেষত কোন গাছের বড় হওয়ার ধরণ কেমন, তাদের কীভাবে লালনপালন করতে হবে, তা কন্নড়ভূমের এই ‘বৃক্ষমাতা’র নখদর্পণে ছিল। জীবনভর সবুজ সংরক্ষণের প্রতি নিয়োজিত প্রাণ এই তুলসী গৌড়া ২০২০ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন। ২০২৩ সালে ধারওয়াড় বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডক্টরেট পদ দেয়। সংসারে বর্তমানে তাঁর ছেলে রয়েছেন, রয়েছেন কন্যা। আর নাতি, নাতনিরা রয়েছেন।
তুলসী গৌড়ার প্রয়াণ বার্তা পেতেই শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি তাঁর শোক বার্তায় বলেন, ‘শ্রীমতী তুলসী গৌড়ার মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। তুলসী গৌড়া জি, কর্ণাটকের একজন শ্রদ্ধেয় পরিবেশবিদ এবং পদ্ম পুরস্কারপ্রাপ্ত। তিনি প্রকৃতির লালন, হাজার হাজার চারা রোপণ এবং আমাদের পরিবেশ সংরক্ষণে তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য একটি পথপ্রদর্শক আলো হয়ে থাকবেন। তাঁর কাজ আমাদের বিশ্বকে রক্ষা করার জন্য প্রজন্ম ধরে অনুপ্রাণিত করতে থাকবে। তাঁর পরিবার ও ভক্তদের প্রতি সমবেদনা। ওম শান্তি।’