শনিবার সকালে স্বাস্থ্য ভবনে আচমকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে বিগত কয়েকদিন ধরে সেখানেই ধর্নায় বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারও।
ডাক্তারদের ধর্নামঞ্চের সামনে গিয়ে সাংবাদিক বৈঠকের মাধ্যমে তাঁদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আমার নিরাপত্তাজনিত নানা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তা সত্ত্বেও আমি নিজে ছুটে এসেছি। আপনাদের আন্দোলনকে কুর্নিশ জানাচ্ছি। আমি আপনাদের ব্যথা বুঝি। আমিও ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে এসেছি।’’
পাশাপাশি আবহাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘শুক্রবার সারা রাত ঝড়়জল হয়েছে। আপনারা যে ভাবে বসে আছেন, আমার কষ্ট হচ্ছে। গত ৩৪ দিন ধরে আমিও রাতের পর রাত ঘুমোইনি। কারণ, আপনারা রাস্তায় থাকলে আমাকেও পাহারাদার হিসাবে জেগে থাকতে হয়।’’
মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন যে আন্দোলনকারীদের দাবি সরকার বিবেচনা করবেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘যদি আপনারা কাজে ফিরতে চান, আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আপনাদের দাবিগুলি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করব। আমি একা সরকার চালাই না। মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজি সকলের সঙ্গে আমি আপনাদের দাবি নিয়ে আলোচনা করব। যদি কেউ দোষী হন, শাস্তি পাবেন। সিবিআইকে অনুরোধ করব, দ্রুত তদন্ত শেষ করুন। দোষীদের ফাঁসি হোক। কেউ দোষী থাকলে আমি নিশ্চয় ব্যবস্থা নেব। এটুকু বলতেই আমি এসেছি।’’
আরজি কর হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতির দিকে আগেই অভিযোগের আঙুল উঠেছিল। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান সব মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে নতুন করে তৈরি করা হবে। তিনি জানান সব হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি নতুন করে তৈরি করা হবে। তাতে জুনিয়র ডাক্তার, সিনিয়র ডাক্তার, নার্স, পুলিশ সকলের প্রতিনিধি থাকবে।
এর আগে সুপ্রীম কোর্ট বলেছিল মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে না ফিরলে রাজ্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু মমতা আশ্বাস দেন, রাজ্য সরকার ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেবে না। তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা চলছে। কোনও পদক্ষেপ আপনাদের বিরুদ্ধে করা হবে না। এখন আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এখানে আসিনি। আন্দোলনের সমব্যথী হিসাবে এসেছি। আপনাদের বড় দিদি হয়ে এসেছি। আপনাদের কাছে আসা মানে নিজেকে ছোট করা নয়। বড় করা। এটা আমার শেষ চেষ্টা। যে যা দিচ্ছে, খেয়ে নেবেন না।’’