ভাই-বোনের মধ্যে ভাইফোঁটা বিশেষ একটি উৎসব। বোনেরা সারাদিন উপবাস থেকে ভাইদের মঙ্গল কামনায় এই ব্রত করে থাকে। আর এই দিন যখন সব ভাই-বোনরা এক হয় সেই সব বাড়ির ছাদ আর চিলেকোঠাই হয়ে ওঠে বিশেষ জায়গা। ইদানীং পেশার প্রয়োজনে সেই ভাইবোনেরাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে নানা প্রান্তে। দেখা হয়তো হয় বছরের একটিই দিন— ভাইফোঁটায়। সকালবেলার ফোঁটা পর্ব মিটলে সন্ধ্যাটা ভাইবোনেদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার জন্য রাখা যেতেই পারে (কারণ ওই একটি দিনে আর কারও ভাগ বসানো বারণ)। আর সেই আড্ডা আরও নস্টালজিক করে তুলতে আসর বসানো যেতে পারে বাড়ির ছাদেই।

ব্যস্ত জীবনে এমনিতে ছাদে ওঠার সময় বড় একটা মেলে না। সে সুযোগ হয়েছিল লকডাউন পর্বে। ছাদের গুরুত্ব বেড়েছিল তখন। বাড়ি থেকে বেরনো বন্ধ হওয়ায় ছাদেই মুক্তির স্বাদ খুঁজে নিয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু কোভিড ভয় কাটতেই আবার একলা হয়েছে ছাদ। অথচ খোলা আকাশের নীচে বাড়িতেই থাকা সুন্দর একটি ফাঁকা জায়গাতে চাইলে কত কিছুই করা যায়! তার জন্য প্রচুর খরচ করে রুফটপ রেস্তোরাঁয় যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ভাইফোঁটায় ছাদে ভাইবোনেদের আড্ডা জমাতে চাইলে কী ভাবে সাজাবেন?

কলকাতার এক অন্দরসজ্জা শিল্পী জানাচ্ছেন, ভাইবোনেদের সঙ্গে আড্ডা যখন, তখন সাজসজ্জা খুব শৌখিন না হলেও চলবে। বরং আরাম আর স্বাচ্ছন্দ্যে গুরুত্ব পাক বেশি। এমন ভাবে সাজাতে হবে যাতে ভাইবোনের সম্পর্কের উষ্ণতা ধরা পড়ে। অতিরিক্ত সাজসজ্জার ভারে গুছিয়ে গল্প করার মেজাজ যেন হারিয়ে না যায়। তাঁর পরামর্শ বরং সম্ভব হলে সেখানে ভাইবোনেদের স্মৃতি তাজা করে এমন কিছু রাখা যেতে পারে, যা দিয়ে গল্প শুরু করা যায়।

নভেম্বরের শুরুর এই সময়ে ছাদে আড্ডা জমানোর সুবিধা এই যে, বৃষ্টি হয়ে আসর ভেস্তে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। তবে যেহেতু নভেম্বর, বাতাসে সামান্য শীতের ভাব আসতে শুরু করেছে, তাই বাইরে আড্ডার আসর জমালে যাতে ঠান্ডা না লাগে তার ব্যবস্থাও রাখা উচিত। সেক্ষেত্রে যাঁরা আসছেন, তাঁদের আগে থেকে জানিয়ে দেওয়াই ভাল। যাতে বাইরে দীর্ঘ ক্ষণ থাকার মতো উপযুক্ত পোশাক পরে আসেন। যদি সারপ্রাইজ় পার্টি হয়, তবে ভাইবোনেদের জন্য গরম চাদরের জোগান রাখুন।

বসার জায়গার ব্যবস্থা করবেন যেখানে, তার মাথায় সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা দেওয়া যেতে পারে। তার উপরে এখন যে সমস্ত ফেয়ারি লাইট পাওয়া যায়, তেমন উষ্ণ সাদা বা হলুদ রঙের আলো দিয়ে সাজানো যেতে পারে।

বসার জায়গার জন্য আলাদা আলাদা চেয়ার না রেখে চওড়া কাঠের পাটাতনে গদি পেতে সাদা চাদর দিয়ে ঢেকে দেওয়া যেতে পারে। খাবার দাবারের ব্যবস্থা করলে। বসার জায়গার সামনেই কাঠের পাটাতন দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন টেবিল। তার উপরে টেবিলক্লথ পেতে উপরে সাজিয়ে দিন ছোট ছোট ইলেকট্রনিক বাতি বা ল্যাম্প। চাইলে চারপাশে কিছু পাতাবাহার বা ফুলের গাছ দিয়েও সাজাতে পারেন জায়গাটি।

ব্যস তাহলেই আড্ডা জমানোর আবহ তৈরি। এ বার শুধু ছোটবেলার স্মৃতিতে ভেসে যাওয়ার অপেক্ষা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here