এই মুহূর্তে বাবা সিদ্দিকির হত্যা ঘিরে সরগরম বলিউড। শনিবার বান্দ্রায় খুন হন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা তিনি। রাত পোহাতেই খুনের দায় স্বীকার করে লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং। বলা হচ্ছে তাদের মূল লক্ষ্য বাবা ঘনিষ্ঠ বলিউড সুপারস্টার সলমন খান। কে এই লরেন্স বিষ্ণোই?
জানা যাচ্ছে, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশে জাল পাতা রয়েছে তার। নিজে জেলে থাকলেও অপরাধে খামতি নেই। লরেন্সের নেটওয়ার্ক ভীষনভাবে সক্রিয়।
অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। লরেন্সের বাবা ছিলেন হরিয়ানা পুলিশের আধিকারিক। সচ্ছ্বল পরিবারেরই বেড়ে ওঠা লরেন্স তথা বলকরন বরারের। পরিবার ছিল যাকে বলে কোটিপতি।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, লরেন্সের জীবনে ঘটেছিল এক ভয়াবহ ঘটনা। কনভেন্ট স্কুলে পড়ার সময় তিনি একটি মেয়ের প্রেমে পড়েন। যা কলেজে উঠে সম্পর্কে পরিণত হয়। চণ্ডীগড়ের ডিএভি কলেজে পড়তেন দু’জনই। লরেন্স সেসময় ছাত্র রাজনীতির পরিচিত মুখ। করতেন সপু পার্টি। ২০১১ সালের ছাত্র নির্বাচনের আগে বিষ্ণোই গোষ্ঠীর সঙ্গে ঝামেলা লাগে বিরোধী গোষ্ঠীর। সেই শত্রুতা থেকেই জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয় লরেন্সের সেই প্রেমিকাকে। এই মর্মান্তিক ঘটনা মানতে পারেনি লরেন্স। তারপরই প্রতিশোধপ্রবণতার আগুন ধিকি ধিকি করে জ্বলতে জ্বলতে একসময় দাবালন হয়ে ওঠে। বিরোধীদের মারধর করতে শুরু করে লরেন্স। শূন্যে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিও চালায়। এরপরই লরেন্সের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া প্রথম মামলা। জেলে যেতে হয় তাকে।
জেল থেকে বেরিয়ে বিরোধী নেতার বাড়িতে ঢুকে পার্কিংয়ে থাকা একটি মিৎসুবিসি প্যাজেরো স্পোর্টস ও একটি মারুতি ওমনিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ফের মামলা দায়ের হয়।
প্রথমবার জেলে ঢুকেই নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করে লরেন্স। জেলে বন্দি বিভিন্ন অপরাধীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে ও তার পর তাদের সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত করায়। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেই এত বড় নেটওয়ার্ক সে তৈরি করেছে বলে জানা যায়।
২০১৭ সাল পর্যন্ত মাত্র সাত বছরে ১৬টি গুলি চালানোর ঘটনায় নাম জড়ায় লরেন্সের। এই সময়ে পাঞ্জাব, চণ্ডীগড়, রাজস্থান এবং হরিয়ানা—চার রাজ্যে মোট ৩৩টি মামলায় নাম জড়ায় পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র নেতার। এর মধ্যেই লরেন্সের নাম ফের শিরোনামে উঠে আসে সলমন খানকে একাধিকবার খুনের হুমকি দেওয়ার।
২০২২ সালে পাঞ্জাব থেকে আপ ২২৪ জন ভিআইপির নিরাপত্তা তুলে নেওয়ার পরের দিন গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয় বিখ্যাত গায়ক তথা রাজনীতিক সিধু মুসেওয়ালাকে। খুনের দায় স্বীকার করে বিষ্ণোই গ্যাং। তারপর শনিবার বাবা সিদ্দিকি। শনিবার তাকে গুলি করে খুন করে তিন দুষ্কৃতী। খুনের সুপারি বিষ্ণোই গ্যাংয়ের থেকেই তারা পেয়েছিল বলে জানা যায়।