বিনোদন জগতে ফের একটি শোকের সংবাদ। প্রয়াত জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালক রাজা মিত্র। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ৩টে নাগাদ শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।

ফেসবুকে পরিচালকের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন তাঁর ছেলে রৌদ্র মিত্র। তিনি লেখেন, ‘চলচ্চিত্রে ৬ বারের জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী (স্বর্ণকমল ও রজতকমল মিলিয়ে), ঋজু শিরদাঁড়া, জেদি এবং বরাবরই স্পষ্টবাদী আমার বাবা, রাজা মিত্র আজ গভীর রাত ৩টের সময়ে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে প্রয়াত হয়েছেন।’ রৌদ্র মিত্রর পোস্টের কমেন্টে অনেকেই জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।

পরিচালক অতনু ঘোষও লেখেন, ‘রাজাদা চলে গেলেন। রাজা মিত্র। যাঁর একটি জীবন বাংলা ছবির ইতিহাসে মাইলফলক। অত‍্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আরও কত কাজ- নয়নতারা, যতনের জমি, বীরভূমের স্ক্রোল পেইন্টার্স বা কালীঘাট পেইন্টিং তথ‍্যচিত্র। খুব সম্ভবত দূরদর্শনে প্রথম আলাপ। এমনিতেই আমি জাত মুখচোরা, আর উনি অত নামী মানুষ। তারপর বুঝি বড় পরিচালকের কোনও ভার নেই, দিব‍্যি সহজে কথা বলা যায়, প্রশ্ন করা যায়। পরে যখন যেখানে দেখা হয়েছে, অনায়াসে কাঁধে হাত তুলে দিয়েছেন- ‘ওটা দেখলাম। বেশ করেছো, এখন কী ভাবছ?’ অনেকটা অক্সিজেন পেয়েছি। আমার মত আনকোরার কাজ রাজা মিত্র দেখেছেন, দেখেন? একবার গোর্কি সদনের গৌতমদা (ঘোষ) নতুন টেলিফিল্ম করিয়েদের উৎসাহ দিতে এক সাক্ষাৎকারের আয়োজন করেছেন। আমার সেশন শুরু হওয়ার আগে হঠাৎ দেখি রাজাদা দর্শকদের মধ‍্যে এসে বসলেন। আমি অবাক, হতবম্ব। ভাবলাম হয়তো কোনও কাজে এসেছেন। না না, তোমার কথা শুনতেই এলাম! অকপট, স্পষ্টবাদী। সেদিন বুঝেছিলাম, যিনি প্রকৃত শিল্পী, তিনি কাঁচাদের পাশে দাঁড়ান, রাস্তা দেখান, এগিয়ে দেন…সশ্রদ্ধ প্রণাম, ভালোবাসা রাজাদা।’

প্রসঙ্গত নভেম্বরের শেষ দিকে রাজা মিত্রর ছেলে নিজেই ফেসবুকে সকলকে জানিয়েছিলেন যে পরিচালকের ক্যানসার ধরা পড়েছে। ফুসফুসে ক্যানসারের সঙ্গে মস্তিষ্কে টিউমারও ধরা পড়েছে। জানিয়েছিলেন, ‘বাবা এখন অসুস্থ, এই অবস্থায় ওঁর সঙ্গে ফোন, মেসেজ বা ফেসবুকে কোনওভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হবে না। বাবার অসুস্থতায় কোনও প্রয়োজন হলে আপনাদের পাশে থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here