সনাতন ধর্মে ঈশ্বরের আরানায় নিবেদিত প্রসাদকে অমৃতের মতো পবিত্র বলে মনে করা হয়। এই ভোগ গ্রহণের মাধ্যমে ব্যক্তি স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঈশ্বরের আশীর্বাদ লাভ করে। সাধারণত সকল দেবদেবীর পুজোয় দেওয়া প্রসাদ বিতরণ ও খাওয়া হয়।
কিন্তু শিবলিঙ্গে নিবেদিত প্রসাদ গ্রহণ করা নিষিদ্ধ। আপনিও যদি শ্রাবণ মাসে শিবলিঙ্গের পুজো করেন, তাহলে জেনে নিন কেন শিবলিঙ্গে দেওয়া প্রসাদ খাওয়া উচিৎ নয়।
শিবলিঙ্গে দেওয়া প্রসাদ খাবেন না কেন?
শিব পুরাণ অনুসারে ভগবান শিবের মুখ থেকে চন্ডেশ্বর নামে একটি গণ আবির্ভূত হয়েছিল। চন্ডেশ্বর হলেন ভূত ও আত্মার প্রধান। মনে করা হয় যে শিবলিঙ্গে দেওয়া প্রসাদ চন্ডেশ্বরের। এই কারণেই শিবলিঙ্গে অর্পণ করা প্রসাদ গ্রহণ ভূত-প্রেতের থেকে খাবার গ্রহণের মতো। তাই শিবলিঙ্গে অর্পিত প্রসাদ খাওয়া নিষিদ্ধ।
কোন শিবলিঙ্গে অর্পিত প্রসাদ খাওয়া নিষিদ্ধ?
ধর্মীয় শাস্ত্র অনুসারে, মাটি, পাথর এবং চিনামাটির তৈরি শিবলিঙ্গে অর্পিত প্রসাদ খাওয়া উচিৎ নয়, এটি চন্ডেশ্বরের একটি অংশ।
যারা শ্রাবণ সোমবার মাটির শিবলিঙ্গ তৈরি করে পুজো করেন, তারা শিবলিঙ্গে অর্পণ করা প্রসাদ গ্রহণ করবেন না। বরং প্রসাদ জলে ভাসিয়ে দিন।
এই ধরনের শিবলিঙ্গে দেওয়া প্রসাদ খেলে দোষ দূর হয়
ধাতুর তৈরি শিবলিঙ্গের প্রসাদ খেতে পারেন, যেমন রূপো, তামা, পিতলের তৈরি শিবলিঙ্গ। এই প্রসাদকে শিবের অঙ্গ বলে মনে করা হয়। শিবপুরাণে বলা হয়েছে যে, ভগবান শিবের প্রসাদ অসংখ্য পাপের বিনাশ করে।
পারদ শিবলিঙ্গে প্রসাদ নিবেদনের পর তা খেতে পারেন এবং বাড়িতেও নিয়ে যেতে পারেন। এতে কোনও দোষ নেই।
প্রসাদ প্রদানের নিয়ম
মহাদেবকে সর্বদা শুধুমাত্র সাত্ত্বিক জিনিস নিবেদন করা উচিৎ।
মাটিতে কখনওই প্রসাদ দেওয়া উচিৎ নয়।
পিতল বা রৌপ্য ইত্যাদি ধাতু দিয়ে তৈরি পাত্রে প্রসাদ নিবেদন করুন।
পুজো শেষ হওয়ার পর দেবতার কাছ থেকে প্রসাদ গ্রহণ করা উচিৎ এবং পরিবারের সকলে মিলে সেই প্রসাদ ভক্তি সহকারে গ্রহণ করা উচিৎ।