সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ তৈরি করতে হলে ছোটবেলা থেকেই ভিত গড়তে হয়। মা-বাবার ভালবাসা, স্নেহ ছেলেমেয়েকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে জীবনে। ছোট থেকেই তাই সন্তান এবং মা-বাবার মধ্যেকার সম্পর্ক হওয়া উচিৎ বন্ধুত্বপূর্ণ।

পারস্পরিক এই সংযোগ, বিশ্বাসযোগ্যতা কিন্তু একটু একটু করে গড়ে তুলতে হয়। অফিস, সংসারের ঝামেলায় জেরবার হয়ে সন্তানের উপর রাগ উগরে দিলে চলবে না। বরং সন্তানের পাশে থাকতে হবে, তাকে ভালবাসতে হবে, আশ্বাস জোগাতে হবে।

সন্তানকে সময় দেওয়া অত্যন্ত জরুরি এক্ষেত্রে। বকাঝকা করার জন্য নয়, আপনি যে ভালবাসেন, স্নেহ করেন, ভাল চান, তা বোঝাতে হবে। তাকে কোলে নিন, আদর করুন, তার কাছে বসুন। এতে বিশ্বাসযোগ্যতা, ভরসা তৈরি হয়।

সংসারের দায়দায়িত্ব, ঝুটঝামেলা থাকবেই, কিন্তু বাচ্চার সঙ্গে খেলেছেন কখনও? প্রাণ খুলে হেসেছেন একসঙ্গে? এতে মানসিক সংযোগ দৃঢ় হয়। সব দুঃখ ভুলে আপনার মনও ভাল হয়ে যেতে বাধ্য।

সন্তানের সঙ্গে রয়েছেন যখন, তার উপরই মনসংযোগ করুন। ওই সময় ফোন, ল্যাপটপ, দূরে সরিয়ে রাখুন। মন দিয়ে সন্তানের কথা শুনুন, চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলুন। এতে ভয় কাটিয়ে সন্তান আপনাকে ভরসা করতে শুরু করবে। নির্ভয়ে সব কথা বলার সাহস পাবে।

কৈশোরে সব ছেলেমেয়ের মধ্যেই পরিবর্তন আসে, মানসিক এবং শারীরিকও। ওই সময় বাড়ির লোকের বাইরেও বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে একটা জগৎ তৈরি হয় তাদের। এমন সময় কথায় কথায় খুঁত ধরলে, বকাঝকা করলে, মানসিক ভাবে আপনার থেকে দূরে চলে যেতে পারে সন্তান।

যত ব্যস্ততাই থাকুক, অন্তত দিনে ১৫ মিনিট সন্তানের সঙ্গে কাটান, যেখানে অন্য কেউ বিরক্ত করবে না আপনাদের। খেলাধূলা করতে পারেন, গল্পও করতে পারেন। কিন্তু সন্তানের কাছে যান, তাকেও আপনার কাছে আসতে দিন।

শিশুদের মনে পাপ নেই। সমস্ত আবেগ, অনুভূতি, প্রকাশ করে ফেলে। আপনার অপ্রিয় কিছু বললেই তেড়ে যাবেন না। এতে বিপরীত প্রতিক্রিয়া হতে পারে। ভবিষ্যতে হয়ত আর মন খুলে কথাই বলবে না সন্তান। তাই নমনীয় হোন। শিশুকে ভালমন্দ বোঝানোর আগে, নিজে সন্তানের মন বুঝুন।

মা-বাবাকে দেখলে একটু বেশিই ভালবাসা, স্নেহ ও আদর পেতে চায় সন্তান। সামান্য কাটাছেঁড়াও বড় বলে মনে হয়। কেউ বকলে নালিশ করতে ছুটে আসে। এক্ষেত্রে সহমর্মিতা দেখানো জরুরি। সন্তানের ভুল থাকলে, সেটা ভাল করেই বোঝাতে হবে তাকে। নইলে আপনাকে শত্রু মনে করতে পারে সন্তান।

সন্তান ঘুমিয়ে না পড়া পর্যন্ত তার কাছে থাকার চেষ্টা করুন। হয়ত পাশে শুয়ে থাকলেন কিছু ক্ষণ, বা গল্প বলে শোনালেন, স্কুলে কী হয়েছে জানতে চাইলেন। এতে সম্পর্কের ভিত মজবুত হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here