পুজোর ঘর সবসময় বাস্তুর নিয়মানুযায়ী হওয়া প্রয়োজন। তা না হলে হাজার পুজো করলেও সুফল পাওয়া যায় না। তাই ঠাকুরঘর তৈরি করার সময় কিছু বিষয়ের বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। আর তা করলে ঘরে ইতিবাচক শক্তি সঞ্চারিত হবে।

প্রথমেই মনে রাখবেন, আপনার ঠাকুরঘর যে দিকেই হোক না কেন, ঠাকুরের মুখের দিক উত্তর-পূর্ব দিকে থাকে। পুজো করার সময় একে শুভ বলে মনে করা হয়।

বাস্তু অনুসারে, ঠাকুরঘর হল এক শান্তিস্থল। তাই এর রঙও মৃদু, চোখের জন্য আরামদায়ক হওয়া উচিত। ঠাকুরঘরে সাদা, হলুদ, হালকা নীল, কমলার মতো রঙ বেছে নেওয়া যেতে পারে।

আপনি যদি বাস্তু অনুসারে ঠাকুরঘর তৈরি করতে চান, তবে মনে রাখবেন তা যেন সিঁড়ি এবং বাথরুম থেকে দূরে থাকে।

বাস্তু অনুসারে, মাটিতে দেব-দেবীর মূর্তি রাখবেন না। মূর্তি সবসময় সিংহাসনে রাখুন। সিংহাসন এবং ঘরের দেওয়ালের মধ্যে অন্তত দেড় ইঞ্চি জায়গা ছেড়ে রাখবেন।

ঠাকুরঘরে প্রদীপ ও মোমবাতি জ্বালানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। বাস্তু অনুসারে, ঘরে ধূপকাঠি এবং ঘি জ্বালালে নেতিবাচক শক্তি দূর হয়, তাই প্রতিমার সামনে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রদীপ রাখুন।

বাস্তু অনুসারে, দেব-দেবীর ভাঙা মূর্তি রাখা এড়িয়ে চলা শ্রেয়। এটি আসলে অশুভ এবং বাস্তু ত্রুটি হিসাবে বিবেচিত হয়। তাই ভাঙা মূর্তিগুলিকে নদীতে ভাসিয়ে দিতে পারেন বা অশ্বত্থ গাছের নীচে রাখতে পারেন।

উত্তর-পূর্ব কোণ(ঈশান) মানসিক স্বচ্ছতা এবং প্রজ্ঞার দিক। তাই উপাসনার জন্য আদর্শ কোণ এটি।

পুজো করার সময় মুখ পূর্ব বা উত্তর দিকে রাখতে হবে। বাস্তু শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে ধন-সম্পদ লাভের জন্য উত্তর দিকে মুখ করে এবং জ্ঞান লাভের জন্য পূর্ব দিকে মুখ করে পুজো করলে অপ্রত্যাশিত সুফল পাওয়া যায়।

প্রতিটি দিকের নিজস্ব দেবতা থাকে যিনি সেই দিকটির প্রতিনিধিত্ব করেন। তাই সেই দেবতার আশীর্বাদ পেতে হলে নির্দিষ্ট সেই দিকের উপাসনা করাই ভাল। যেমন-

দক্ষিণ দিক মা দুর্গা ও হনুমানজির পুজো

উত্তর দিকে গণেশ

লক্ষ্মী ও কুবেরের উত্তর-পূর্ব দিক

পূর্ব দিকে শিব পরিবার, রাধা-কৃষ্ণ ও শ্রী রাম দরবার, ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা ও সূর্যের আরাধনা করলে পরিবারে সৌভাগ্য বৃদ্ধি পায়।

পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে বিদ্যাদায়িনী মা সরস্বতীর আরাধনা করা উচিৎ।

ঠাকুরের সামনে সকাল ও সন্ধ্যায় নিয়মিত একটি প্রদীপ জ্বালাতে হবে ও শঙ্খ বাজাতে হবে। এটি করলে নেতিবাচক শক্তি দূর হবে। পরিবারে সুখ ও সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরি হবে। পুজোর ঘরে কখনই শুকনো ফুল রাখবেন না, এটিকে বাস্তুতে শুভ বলে মনে করা হয় না। পুজোর ঘরে হালকা সবুজ, হলুদ, বেগুনি বা ক্রিম জাতীয় যেকোনও ধরনের সাত্ত্বিক রঙ ব্যবহার করলে মনে শান্তি আসে।

এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন

ঠাকুরঘরের নিচে বা উপরে টয়লেট থাকা উচিত নয়।

ঠাকুরঘরে মহাভারতের মূর্তি, পশু-পাখির ছবি রাখা উচিত নয়।

মৃত ব্যক্তির ছবিও এখানে রাখা হয়নি।

ঠাকুরঘরে সম্পদ লুকিয়ে রাখা শুভ বলে মনে করা হয় না।

এখানে কোনও খণ্ডিত ছবি বা মূর্তি রাখা উচিত নয়।

দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে তৈরি ঘর পুজোর জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here