উচ্চমাধ্যমিক উত্তরপত্রে রাজনৈতিক স্লোগান লিখলে বাতিল হতে পারে পরীক্ষা। সম্প্রতি উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ পরীক্ষার্থীদের জন্য ২৫ দফা নিয়মবিধির কথা জানিয়ে একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, খাতায় আপত্তিকর ও অশালীন কিছু লিখলে এবং রাজনৈতিক স্লোগান লিখলে উত্তরপত্র বাতিল হতে পারে। পরীক্ষার্থীর তরফে সন্তোষজনক উত্তর না মিললে বাতিল হতে পারে গোটা পরীক্ষাই।

তা ছাড়াও শিক্ষা সংসদের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোনও পরীক্ষার্থী খাতায় ভুল নাম, রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখলে, উত্তরপত্র নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্র ছাড়লে, অন্য পরীক্ষার্থীকে খাতা দিয়ে লিখতে সহায়তা করলে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে। উত্তরপত্রে উত্তর সম্বলিত চিরকুট, টাকার নোট মিললেও সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে পারে সংসদ।

প্রতি বছরই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য একাধিক নির্দেশিকা সম্বলিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সংসদ। এর মধ্যে কোনও অভিনবত্ব নেই বলেই জানাচ্ছেন সংসদের কর্তারা। একই মত উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যেরও। তিনি বলেন, “পরীক্ষার্থীদের জন্য আগেও এই নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল। কোনও পড়ুয়া যদি পরীক্ষার খাতায় অপ্রাসঙ্গিক কোনও রাজনৈতিক স্লোগান বা মন্তব্য লেখেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হতে পারে।”

তবে এ ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের পরীক্ষা বাতিল হবে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে চিরঞ্জীব জানান যে, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় অনিয়ম রোধে গঠিত একটি কমিটি। সেই কমিটি অভিযুক্ত পড়ুয়াকে ডেকে তাঁর কাজের কারণ জানতে চায়। পরীক্ষার্থীর ব্যাখ্যায় কমিটির সদস্যেরা সন্তুষ্ট হলে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। অন্যথায়, নির্দিষ্ট ওই উত্তরপত্রটির মূল্যায়ন করা হয় না। এমনকি নিয়মভঙ্গের গুরুতর প্রমাণ মিললে পরীক্ষার্থীর গোটা পরীক্ষাই বাতিল করে দেওয়া হতে পারে বলে জানান তিনি।

শিক্ষা সংসদের তরফে এটিকে রুটিন নির্দেশিকা বলা হলেও আরজি কর-কাণ্ডের আবহে বিষয়টিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন কেউ কেউ। আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় বিচার চেয়ে সমাজমাধ্যমে তো বটেই, এমনকি খেলার ময়দানেও সরব হচ্ছেন বিভিন্ন মানুষ। রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলেও প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হয়েছেন পড়ুয়ারা। এই নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের জবাব চেয়ে হাওড়া জেলার তিনটি স্কুলকে শোকজ় নোটিস দেয় স্কুল শিক্ষা দফতর। এই পরিস্থিতিতে আরজি কর-উত্তাপ যাতে উচ্চমাধ্যমিকের খাতা অবধি না পৌঁছয়, সেই কারণেই এই নির্দেশিকা কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যদিও সংসদের দাবি, এই নির্দেশিকায় কোনও অভিনবত্ব নেই। আগেও একই নির্দেশিকা দেওয়া হত।

আগামী বছর সিমেস্টার পদ্ধতিতে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হতে চলেছে। পরীক্ষা শুরু হবে ৩ মার্চ। শেষ হবে ১৮ মার্চ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here