বিহারের মধুবনীতে জন্মগ্রহণকারী ধীরেন্দ্র ব্রহ্মচারী ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত নেহরু ও ইন্দিরা গান্ধীর যোগগুরু। ইন্দিরার সঙ্গে তিনি এতটাই ঘনিষ্ঠ ছিলেন যে, তিনি ইন্দিরাকে বন্ধ ঘরে যোগ শিখাতেন। ইন্দিরা গান্ধীর জীবনী লেখিকা ক্যাথরিন ফ্র্যাঙ্ক তাঁর বইতেও ধীরেন্দ্র ব্রহ্মচারীর উল্লেখ করেছেন।
ধীরেন্দ্র ব্রহ্মচারী মাত্র ১৩ বছর বয়সেই বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন। এরপর তিনি লখনউয়ের মহর্ষি কার্তিকেয় আশ্রমে যোগ শিখতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে তিনি দিল্লির রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন। তার প্রভাব এতটাই ছিল যে তাঁর কাছে চার সিটার প্রাইভেট জেট, ১৯ সিটার ডার্নিয়ার এবং আরও একটি বিমান ছিল। তিনি নিজেও প্রশিক্ষিত পাইলট ছিলেন এবং নিজেই বিমান চালাতেন।
ধীরেন্দ্র ব্রহ্মচারীর জন্ম ১৯২৪ সালে, ১৯৫৮ সালে তিনি দিল্লি আসেন। কাশ্মীরে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে তাঁর প্রথম দেখা হয়, সেখান থেকেই তিনি ইন্দিরার যোগগুরু হন। শুধু ইন্দিরাই নয়, জয়প্রকাশ নারায়ণ, মোরারজি দেশাই এবং ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদও তাঁর শিষ্য ছিলেন।
ইন্দিরার কাছের মানুষ হওয়ার কারণে ধীরেন্দ্র ব্রহ্মচারী তাঁকে “রাসপুটিন” বলেও অভিহিত করা হত। জরুরী অবস্থার সময় ইন্দিরার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয় এবং তাঁর সম্পত্তির পরিমাণও বাড়তে থাকে।
১৯৮০ সালে সঞ্জয় গান্ধীর মৃত্যুতে তাঁর প্রভাব কমতে থাকে। রাজীব গান্ধীর সঙ্গে ধীরেন্দ্রর মতপার্থক্যর কারণে পরবর্তীতে তাঁর অনুষ্ঠানটি দূরদর্শন থেকে হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে যোগগুরুর প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। ইন্দিরার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতেও তাঁকে দূরে রাখা হয়। ইন্দিরার মৃত্যুর কিছুদিন পর, এক বিমান দুর্ঘটনায় ধীরেন্দ্র ব্রহ্মচারীর জীবনাবসান হয়।