ভারতীয় ফুটবলের মূল স্তম্ভ বলে মনে করা হয় কলকাতার তিন প্রধান ক্লাব ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান এবং মহমেডান’কে। দীর্ঘদিন ধরে দেশের ফুটবলকে সমৃদ্ধ করে এসেছে এই তিন শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব। খেলা আর রাজনীতি যে একই কয়েনের দুই পিঠ হতে পারে না, তা সবসময় প্রচার করে এসেছেন তাঁরা। কিন্তু তিন প্রধানের সেই কর্তারাই এখন প্রকাশ্যে রাজনীতি করছেন।
রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা ময়দানের অতিপরিচিত তিন ক্লাবের সঙ্গে অতীতে যেমন যুক্ত ছিলেন, বর্তমানেও আছেন এবং ভবিষ্যতেও তার অন্যথা হওয়ার সম্ভাবনা কম। রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে ক্লাব কর্তাদের ওঠাবসা এতদিন পর্দার আড়ালে থাকলেও এখন তা সকলের সামনে এসে গিয়েছে।
তিন প্রধানের কর্তারা রাজ্যের শাসক দলের হয়ে প্রকাশ্যে গলা ফাটাচ্ছেন। আগামী ১৩ নভেম্বর রাজ্যে নৈহাটি-সহ ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে। তার আগে তিন প্রধানের কর্তারা দলীয় রাজনীতির অংশীদার হয়ে নৈহাটির তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে’র প্রশংসা করেছেন। সোমবার তৃণমূলের এক্স হ্যান্ডলে প্রচারিত এক ভিডিওয় ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বলেছেন, “সনৎ ভাল সংগঠক। যখনই মাঠ ইত্যাদির ব্যাপারে প্রয়োজন হয়েছে, তিনি সহযোগিতা করেছেন।” মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত বলেছেন, “যখনই মোহনবাগান নৈহাটিতে খেলতে গিয়েছে, তখনই ওঁর সাহায্য পেয়েছি।” মহামেডানের কার্যকরী সভাপতি মহম্মদ কামারউদ্দিন এবং আইএফএ-র সচিব অনির্বাণ দত্তের মুখেও স্তোতবাক্য শোনা যায়।
জনসাধারণের ক্লাবের প্রতিনিধি হয়ে বিশেষ এক রাজনৈতিক দলের প্রচার একেবারেই ভালভাবে নেয়নি রাজ্যবাসীর একটি বড় অংশ। তাই এই নিয়ে চরম কটাক্ষের সম্মুখীন হয়েছেন দেবব্রত সরকার, দেবাশিস দত্ত। ক্ষতে প্রলেপ লাগানোর জন্য তড়িঘড়ি সাংবাদিক সম্মেলন করতে হয়েছে মোহনবাগান সচিবকে। সেখানে তিনি বলেছেন, “দলের খেলার স্বার্থে নৈহাটিতে বেশ কিছু ম্যাচ আয়োজন করতে হয়। সেই কারণে অনেককেই আমাদের প্রয়োজন হয়। সেখানকার লোকালবয় সনৎ দে’ও তেমনই একজন। উনি অনেক আমাদের সাহায্য করেন। ওনার সঙ্গে আমাদের খুব ভাল সম্পর্ক। সেই কারণে আমি তাঁর প্রশংসা করেছি কিন্তু তাঁর হয়ে ভোট চাইনি এবং কোনও রাজনৈতিক দলের হয়েও প্রচার করিনি।”